১২৪তম বার্ষিক উরস উৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশের রাজবাড়ি থেকে পুণ্যার্থীদের নিয়ে বিশেষ ‘মৈত্রী ট্রেন’ এ বার আর আসছে না মেদিনীপুর শহরে!

পশ্চিম মেদিনীপুর সেখ ওয়ারেশ আলী : আগামী সোমবার সাধন মাওলা পাক নামে খ্যাত হযরত সৈয়দ শাহ মুরশেদ আলী আল কাদেরী', আল হাসানী - আল হুসায়নী, আল - বাগদাদি আলায়হিস সালামের ১২৪ তম বার্ষিক ঊরুষ পাক আগামী সোমবার ৪ঠা ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার দিবাগত রাতে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদ মজার পাক,ও দায়রা পাকে অনুষ্ঠিত হইবে। ১২৪-তম বার্ষিক ঊরুস উৎসব উপলক্ষে এবছর বাংলাদেশের রাজবাড়ি থেকে পুণ্যার্থীদের নিয়ে বিশেষ 'মৈত্রী' ট্রেন আর আসছে না মেদিনীপুর শহরে। প্রতিবছর ৪ঠা ফাল্গুন অনুষ্ঠিত বার্ষিক 'ঊরুস' উপলক্ষে ১৯০২ সাল থেকে এই বিশেষ স্পেশাল ট্রেন পুণ্যার্থীদের নিয়ে আসে মেদিনীপুরে। এই ট্রেনে আসেন বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই হাজার পুণ্যার্থী। লটারির মাধ্যমে তাঁদের বেছে নেয় বাংলাদেশের আঞ্জুমন-ই-কাদরী কমিটি। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মেদিনীপুর শহরের এই জোড়া মসজিদ প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে দুই বাংলার মিলনস্থল।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য এবার ছন্দপতন হল! এবার রাজবাড়ির থেকে পূণ‍্যার্থী স্পেশাল ট্রেন আসবে না মেদিনীপুরে। এই নিয়ে পাঁচ বার ঘটল এমনটা। ১৯৬৫ ও ১৯৭১-এ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য এবং ২০২১ ও ২০২২-এ করোনা পরিস্থিতির জন্য ট্রেন আসেনি। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন উরস কমিটির সদস্য সৈয়দ মেহেজুজ আলি। মাওলা পাক’ হজরত সৈয়দ শাহ মুর্শেদ আলি আল কাদেরির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এই উরস পালিত হয়। হজরত মহম্মদের ৩৩-তম বংশধর এবং সুফি সাধনার আদিগুরু ‘বড় পীর সাহেব’ হজরত আব্দুল কাদের জিলানির ১৯-তম বংশধর মওলা পাক ৪ ফাল্গুন প্রয়াত হন। ওই দিনে দেশ-বিদেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের গুরুকে স্মরণ করেন। ১৯০২ সাল থেকে এই বিশেষ মৈত্রী ট্রেন বাংলাদেশ থেকে আসে মেদিনীপুর শহরে। আগামী সোমবার রাতে 'বড় হুজুর' মাওলা পাকের বার্ষিক উরস মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপলক্ষে সেজে উঠেছে জোড়া মসজিদ প্রাঙ্গণ। আজ শনিবার ১৫ই ফেবুয়ারী থেকে মেলাও শুরু হয়েছে। চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার পর্যন্ত। বাংলাদেশের পুণ্যার্থীরা না এলেও, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৭০/৮০ হাজার পুণ্যার্থী আসতে পারেন ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি। মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, "উরুসকে কেন্দ্র করে দুই বাংলার মিলনস্থল হয়ে ওঠে এই ঐতিহাসিক মেদিনীপুর । এবার বাংলাদেশের স্পেশাল পূণ‍্যার্থী ট্রেন আসবে না। আমরা দুঃখিত! কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আমাদের রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা করবো, পরের বছর আবার সবকিছু স্বাভাবিক হবে।