১৪৩০ বাংলা বর্ষের শেষ সূর্য!

নিজস্ব সংবাদদাতা :বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করতে প্রতিবছরই তাই চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। বৈশাখের আনন্দ মূলত শুরু হয় চৈত্র মাসের শেষ দিন থেকেই। আজ চৈত্র সংক্রান্তি, বসন্তকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করার প্রস্তুতির দিন আজ। বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। যদিও শহরে এর আবেদন কম, তবে গ্রামে কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলে আজও গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তির দিন। বছরের বিদায়ী দিনে নানা আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব। ঐতিহ্য অনুযায়ী এদিন খাবারের আয়োজন থাকে আমিষ বিবর্জিত। ফলে নানা ধরনের নিরামিষ থাকে পাতে। তিতা করলাও এদিন নানাভাবে রান্না করা হয়।চৈত্র মাসের শেষ দিন তিতকুটে সব খাবারেরই প্রচলন। এর পেছনে কারণ হচ্ছে বছরের এ সময় প্রচণ্ড গরম থাকে। ফলে রোগবালাই দেখা যায় বেশি। চৈত্রের এই সময়টায় তাই পোলাও, বিরিয়ানি ধরনের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। তিতা করলা, নিমপাতা ভাজি রাখা হয় চৈত্র সংক্রান্তির খাবার মেন্যুতে। এ খাবারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুন ব্যবহার করা হয় না। তবে চিনি ও ঘি ব্যবহার করা হয় রান্নায়। এছাড়া ‘চৌদ্দ’ রকমের শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে চৈত্র সংক্রান্তিতে।চৈত্র সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। চৈত্র সংক্রান্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন চড়ক পূজা। চৈত্র মাস জুড়ে সন্ন্যাসীরা উপবাস, ভিক্ষান্নভোজন প্রভৃতি নিয়ম পালন করেন। সংক্রান্তির দিন তারা শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে ঝোলেন। শারীরিক কসরত দেখতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এসে জড়ো হয় চড়কমেলা-গাজনের মেলায়। মেলার সঙ্গে বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক ও লৌকিক দেবতার নাম সম্পৃক্ত। যেমন- শিবের গাজন, ধর্মের গাজন, নীলের গাজন ইত্যাদি। দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি। যদিও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে মেলার আয়োজন এখন কমে গেছে অনেকটাই।