ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ৫১, নিহত ১১!

ঢাকা জাকির হোসেন: ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টায় মারা গেছেন ১১ অভিবাসনপ্রত্যাশী। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৫১ জনকে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকরাও রয়েছেন। তবে যে ১১ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি রয়েছেন কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া ২৬ শিশুসহ নিখোঁজ রয়েছে ৬৬ জন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স জানায়, ৬১ জন যাত্রী নিয়ে লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে যাত্রা করা একটি নৌকা গত সোমবার (১৭ জুন) ইটালির লাম্পেদুসা উপকূল থেকে ৪০ মাইল (৬০ কিলোমিটার) দূরে এসে ঝুঁকিতে পড়ে।

ভূমধ্যসাগরের সক্রিয় সংস্থা অ্যালার্ম ফোন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের মাল্টা উপকূলে অবস্থিত সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ জোন থেকে উদ্ধার করে জার্মান এনজিও রেসকিউশিপের মানবিক উদ্ধার জাহাজ- নাডির।

রেসকিউশিপের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্টিফেন সেফার্ট বলেন, ''আমরা যখন নৌকাটি খুঁজে পাই, তখন বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমাদের উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে ওপরের ডেকে থাকা লোকদের উদ্ধার করে। পরে দেখতে পাই, নৌকার ডেকের নিচেও মানুষ রয়েছে। স্থানটি পানি এবং পেট্রলের মিশ্রণে ভরা ছিল। রেসকিউশিপের তথ্য অনুসারে, জীবিত উদ্ধার হওয়া ৫১ জনের মধ্যে ৩০ জন বাংলাদেশি। বাকিরা পাকিস্তান, মিশর এবং সিরিয়ার নাগরিক। নিহতদের সবাই পুরুষ। প্রাথমিকভাবে তাদের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সোমবার সকালে ইতালীয় কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের তীরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে মৃতদের ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে নেওয়া হয়েছে।'

রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এবং জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, নৌকাটি লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছিল। এতে সিরিয়া, মিসর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অভিবাসীরা ছিলেন। তবে কোন দেশের কত যাত্রী ছিলেন, তা জানানো হয়নি।

একই দিনে পৃথক আরেক নৌকাডুবির ঘটনায় ৬০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জনের মতো শিশু রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণ ইতালির ক্যালাব্রিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ১২৫ মাইল দূরে এ ঘটনা ঘটে। মেডেসিনস সানস ফ্রন্টিয়েরস (এমএসএফ) নামে একটি সংগঠন এই তথ্য জানিয়েছে।

এ ঘটনায় ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে তাদের সবাইকে তীরে নেওয়ার পর একজন মারা যান বলে জানিয়েছে ইতালীয় কোস্টগার্ড।

উল্লেখ্য, ভূমধ্যসাগর বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী মাইগ্রেশন রুট হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে এই রুটে ২৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি অভিবাসী মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।