আসানসোলে ৫০০ বছরের প্রাচীন মা কল্যাণেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন অতিথি নিবাসের উদ্বোধন!

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০শে জানুয়ারী সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে ৫০০ বছরের প্রাচীন মা কল্যাণেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন অতিথি নিবাসের উদ্বোধন করলেন আসানসোল পৌরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পরিষদ সদস্য গুরুদাস চ্যাটার্জি, ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক সহ আরো অনেকে। মূলত পর্যটকদের থাকার জন্য এই অতিথিনিবাস তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার মানুষজন বিয়ে সহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের এই অতিথিনিবাস ভাড়া নিতে পারবেন।

ঠিক কবে কল্যাণেশ্বরী মন্দির তৈরি হল সে সম্পর্কে কোনও পাথুরে প্রমাণ আজও মেলেনি। অনেকে মনে করেন, কাশিপুরের রাজা এই মন্দির স্থাপন করেছিলেন। জনশ্রুতি, কাশীপুরের এক রাজা বিবাহের যৌতুক হিসেবে দেবী কল্যাণেশ্বরীকে পান। দেবী কল্যাণেশ্বরীর বিগ্রহ ও রাজবধূকে পাল্কিতে করে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার পরে সবনপুর এলাকায় দেবীর মন্দির তৈরি করা হয়। সবনপুর এলাকায় একটি মন্দিরের চিহ্ন এখনও রয়েছে। লোকশ্রুতি অনুসারে, প্রথমে সেখানেই বিরাজমান ছিলেন দেবী কল্যাণেশ্বরী। এই মন্দির পুরনো কল্যাণেশ্বরী মন্দির নামে পরিচিত। কথিত রয়েছে প্রাচীন আমলে এই গ্রামের নাম ছিল স্বপ্নপুর। পরে তাই লোকমুখে সবনপুর-এ রূপান্তরিত হয়। বিনয় ঘোষ তাঁর ‘পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘স্থানটির বিশেষত্ব প্রাচীনত্ব দুই-ই আছে। হয়ত এক সময় এখানে তান্ত্রিকদের একটা বড় ঘাঁটি ছিল।’ লোকমুখে প্রচলিত কাহিনি অনুসারে, সবনপুরের চারপাশে ছিল গ্রাম। সেখানে নাকি সারাদিন ধান থেকে চাল ও চিড়ে তৈরি করা হত। ঢেকির আওয়াজে দেবী কল্যাণেশ্বরী বিরক্ত হয়ে কাশিপুর রাজাকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজা নিকটবর্তী একটি জঙ্গলে দেবীর মন্দির স্থানান্তরিত করেন। পরে এই জঙ্গলকে ঘিরে সিদ্ধপীঠ গড়ে ওঠে। এই মন্দিরটিই আজ কল্যাণেশ্বরী মন্দির নামে পরিচিত। আজও এখানে এক ছোট গুহার মধ্যে দেবীকে রাখা হয়। আর বাইরে রাখা হয়েছে অষ্টধাতুর দক্ষিণাকালী মূর্তি। এই কালীমূর্তিই মা কল্যাণেশ্বরী রূপে পূজিত হন।