অবশেষে পুজোয় ভারতকে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উপহার বাংলাদেশের!

ঢাকা, জাকির হোসেন: অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে৷ ড. ইউনূস সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানি করবে কি না তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত এলো। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক। রপ্তানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো। বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই পণ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে স্বীকৃত ইলিশ। টানা পাঁচ বছর ধরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ। যদিও ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ ছিল। প্রায় প্রতিবছর দুর্গাপুজো উপলক্ষে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়ে থাকেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে দুর্গাপুজো উপলক্ষে ইলিশ চেয়ে আবেদন করেছে৷ পরে উপ-হাইকমিশন বিষয়টি বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিদেশ মন্ত্রকে জানায়। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, চলতি বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভারতে ইলিশ রপ্তানির পক্ষে মতামত দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ড. ইউনূস প্রশাসনের ভারতকে ইলিশ দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের কথায়, রাষ্ট্রসংঘের সভায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগ দিচ্ছেন। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার মধ্যেই মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, মোদী-ইউনূস বৈঠক সম্ভবত হচ্ছে না। শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টার কণ্ঠে বারবার তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা শোনা গিয়েছে। তিস্তা চুক্তি নিয়েও ভারতের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে বাংলাদেশ, দাবি কূটনৈতিক মহলের। সব মিলিয়ে ভারত-বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্কে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘ইলিশ নীতি’ তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।