'হাসিনার দিল্লিতে অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করবে না' -বললেন বাংলাদেশের নয়া বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা!

ঢাকা, জাকির হোসেন : বাংলাদেশের নয়া দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন ১২ আগস্ট সোমবার বলেছেন, "শেখ হাসিনার দিল্লিতে দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।" ভারতে শেখ হাসিনার দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান দুই পড়শি দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে কি না সে বিষয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি বড় বিষয়। এটি পারস্পরিক স্বার্থের উপর গড়ে ওঠে।" তিনি বলেন, “এটি একটি অনুমানমূলক প্রশ্ন। কেউ কোনো দেশে থাকলে কেন ওই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে! এর কোনো কারণ নেই।” তৌহিদ বলেন, "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়। স্বার্থের উপর ভিত্তি করে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং এসব স্বার্থগুলিতে আপস করা হলে তা টিকে না।" বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশে যেমন ভারতের স্বার্থ আছে, তেমনি দিল্লিতে ঢাকার স্বার্থ আছে। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করব এবং ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।"

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো কেউ অন্য দেশের আদেশ মান্য করছে না বলেও জানান তৌহিদ হোসেন৷ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো দেশের হাতে আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, "বাইরের কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। যে কাউন্সিল (উপদেষ্টা) এখন দায়িত্বে আছে আমি কিন্তু এটাকে ক্ষমতার সরকারের মতো একেবারে ব্যবহার করতে চাই না। এটা একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ দায়িত্ব পালন করে আমরা সরে যাব, এ হলো কথা।" তৌহিদ হোসেন বলেন, "যে কাউন্সিল আছে আমি নিশ্চিত করতে পারি এর মধ্যে কেউ অন্য কারও জন্য বিড (আদেশ মান্য) করছে না। সবাই বাংলাদেশের জন্য বিড করছে। কেউ অন্য কোনো দেশের জন্য বিড করছে না। আমার নলেজে যেটা আছে সেটা আমি বলতে পারি। আমার নিজের ব্যাপারে তো নিশ্চয়তা দিতে পারি, কিন্তু অন্যদের ব্যাপারে নিশ্চয়তা না। তবে আমি যা দেখেছি, আমি মোটামুটি নিশ্চিত, কেউ কোনো দেশের হয়ে বিড করছে না৷" ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন 'পদ্মা'য় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সহ চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনারসহ প্রায় ৬৪ জনের মতো কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ১১ আগস্ট রোববার বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, "এটি যদি আইন মন্ত্রণালয় আমাকে কখনও বলে, এটি আমার বিষয় নয়। আইন মন্ত্রণালয় তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাকে বললে আমি চিঠি দেবো। বিদেশ সচিব তখন একটি চিঠি পাঠিয়ে দেবেন।"