প্রয়াত কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার!
নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রয়াত হলেন বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক ও ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। গতকাল গভীর রাতে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, গত পাঁচ বছর ধরেই নানা ধরনের বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন।মূলত ছোটদের জন্যই লিখতেন ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে সামাজিক স্যাটায়ার। 'জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না', এই কবিতার সঙ্গে বাঙালিই পরিচিত। আর এই লেখার সৃষ্টিকর্তা ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। নিজের জীবনে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ছড়া লিখেছেন তিনি। নিজের লেখায় করেছেন নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মজার ছড়া, সোনালি ছড়া, 'কলকাতা তোর খোল খাতা', ‘হাওড়া-ভরা হরেক ছড়া’, ‘ডাইনোছড়া’র মতো বহু বই লিখেছেন। লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সত্যজিৎকে নিয়েও। লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ নইলে অনাথ’, ‘ছড়ায় ছড়ায় সত্যজিৎ’-এর মতো কবিতা।কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের জন্ম ১৯৫৩ সালের ৯ এপ্রিল হাওড়া জেলার জগাছা থানার অন্তর্গত দাশনগরের কাছে দক্ষিণ শানপুর গ্রামে। তাঁর বাবা ছিলেন নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং মা ছিলেন নিরুপমা দেবী। কবির শৈশব জীবন কেটেছে সেই গ্রামেই। কর্মজীবনে প্রবেশ করে কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার শিক্ষকতা করেছেন। বিশিষ্ট এই কবি ও ছড়াকার হাওড়া জেলার শানপুর গ্রামের কালিতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়-এ একজন শিক্ষক হিসাবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সেই সঙ্গে লেখালিখিও চালিয়ে গিয়েছেন।তিনি সাম্মানিক হিসাবে সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে, সন্দেশ পত্রিকার তরফে ‘সুকুমার রায় পদক’ পান। লেখালেখির জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকেও পুরস্কার পেয়েছেন।বাংলা ভাষার প্রতি আমরণ টান, ভালোবাসা, নতুন কিছু গড়ার স্বপ্ন, সর্বোপরি নবপ্রজন্মের মধ্যে এই ভাষার জন্য আবেগ তৈরি করার ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের প্রচেষ্টা আজীবন বাঙালি মনে রাখবে।