"বইবন্ধু" পাঠশালা: পিছিয়ে পড়া শিশুদের জীবনে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন!

নিজস্ব সংবাদদাতা : মেদিনীপুরের প্রান্তিক গাঁয়ে একদল স্বপ্নালু তারুণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় 'বইবন্ধু' পাঠশালা জ্ঞানের আলোকবর্তিকা হাতে জেগে উঠেছে। শহুরে কোলাহল ছেড়ে, এঁরা লোধা শবর অধ্যুষিত নয়াগ্রাম বেনাগুলির নীরব প্রান্তকে বেছে নিয়েছেন শিক্ষার অমৃতধারা বিতরণের পবিত্র ভূমি রূপে। আর জি বি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ছত্রছায়ায় ডিসেম্বরের হিমেল স্পর্শ গায়ে মেখে এই পাঠশালার শুভ উদ্বোধন হয়েছে। এখানে সেইসব ভাগ্যবিড়ম্বিত শিশুদের অক্ষরজ্ঞান দান করা হয়, যারা দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে শিক্ষাঙ্গন থেকে ছিটকে পড়েছে অথবা যাদের বিদ্যালয়ে গিয়েও জ্ঞানার্জনের পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।

'বইবন্ধু' কেবল একটি গতানুগতিক শিক্ষাকেন্দ্র নয়; এটি এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন। প্রকৃতির কোলে, কখনও কারও স্নেহময় বারান্দায়, কখনও বা শ্যামল বৃক্ষতলে চলে এই পাঠদান প্রক্রিয়া। শুধু মেদিনীপুর নয়, উত্তর ২৪ পরগনার ইছামতীর তীরেও এই উদ্যোগের নবীন চারাগাছ অঙ্কুরিত হয়েছে। উদ্যোক্তারা আশার আলো জ্বালিয়ে জানিয়েছেন, শীঘ্রই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং অন্যান্য জেলাতেও এই জ্ঞানালোকের বিস্তার ঘটবে।
এই ব্যতিক্রমী বিদ্যালয়ের স্তম্ভস্বরূপ স্থানীয় শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা, যাঁরা স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাঁদের শ্রম ও নিষ্ঠার প্রতি সম্মান জানিয়ে সামান্য সাম্মানিকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার এবং শিক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করার এই মহৎ উদ্যোগে অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হয়েছেন। 'বইবন্ধু' সত্যিই সেইসব শিশুদের জীবনে এক নবীন প্রভাতের আগমন বার্তা নিয়ে এসেছে, যারা সুযোগের অভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। এই পাঠশালা কেবল শিক্ষার বিস্তার নয়, বরং বঞ্চিত শিশুদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার এক দৃঢ় অঙ্গীকার।