ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা!

ঢাকা জাকির হোসেন: বাংলাদেশের বহু প্রতীক্ষিত ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, সেই দিনক্ষণ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে বুধবার জানান তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন 'যমুনা'য় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর শফিকুল বলেন, প্রফেসর ইউনূস নির্বাচনের পরিবেশ ‘মুক্ত, সুষ্ঠু ও নিরাপদ’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, “দেশের ভেতর ও বাইরের বহু অশুভ শক্তি এই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করবে। এটি চ্যালেঞ্জিং একটি নির্বাচন হবে—কিন্তু যেকোনো ঝড় আমাদের অতিক্রম করতেই হবে।”মাঠপর্যায়ের আধিকারিক বদল শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে, যেখানে স্বার্থের সংঘাত এড়াতে কড়া নির্দেশনা জারি হয়েছে। শফিকুল জানান, “কেউ নিজের জেলা বা যেখানে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় থাকেন সেখানে নিয়োগ পাবেন না।” আগের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যুক্ত আধিকারিকদেরও এবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হবে।
বৈঠকে চারটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র নির্ধারিত হয়েছে—সোশ্যাল মিডিয়া তদারকি, মাঠ প্রশাসন, প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা। ভুয়ো খবর ও বিভ্রান্তি রুখতে দু’টি জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায়। পাশাপাশি, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কনটেন্ট মনিটরিং নিয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচনী ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ জোরদার করা হবে, যেখানে পোশাকে ক্যামেরা ব্যবহারের পাশাপাশি টেলিভিশনে ভোটার সচেতনতা কর্মসূচিও থাকবে।আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ৯২,০০০ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে—প্রতি জেলায় যার একটি কোম্পানি করে বাহিনী থাকবে। ভোটের আগের ৭২ ঘণ্টা ও পরের ৭২ ঘণ্টা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বৈঠকে বলেন, “আমরা সেরার আশা করব, কিন্তু খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতও থাকব।”
শফিকুল জানান, নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শুরুতেই ভোটের তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে। তাঁর কথায়, “এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম স্বচ্ছ নির্বাচনের পথে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”