জাতীয় সড়কে ডাম্পারের মরণধাক্কা, শিক্ষকের করুণ মৃত্যু—স্তব্ধ নারায়ণগড়!
পশ্চিম মেদিনীপুর, সেখ ওয়ারেশ আলী : ভোটের কাজ সেরে স্কুলের পথে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু আর ফেরা হল না। জাতীয় সড়কের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন নারায়ণগড় থানার সাইকা পাটনা গ্রামের বাসিন্দা, বছর ৩১-র অরবিন্দ মিশ্র। তিনি সাইকা ৪৯ নম্বর বুথের বিএলও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা, ভেঙে পড়েছে পরিবার, স্তব্ধ প্রশাসন ও শিক্ষা মহল। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের বাখরাবাদ কলোনির কাছে। প্রতিদিনের মতো এদিনও অরবিন্দ সকাল থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফর্ম সংগ্রহ ও ডিজিটাইজেশনের কাজ সেরে বাইকে করে বেলদার জানকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই পেছন থেকে একটি খালি ডাম্পার প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা মারে তাঁর বাইকে। মুহূর্তের মধ্যে ছিটকে পড়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন অরবিন্দ। দুর্ঘটনার পর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর হাত ও পায়ে গুরুতর চোট লেগেছিল। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের দাদা অর্নব মিশ্র ভাঙা গলায় জানান, “ভাই সকালে বিএলও-র কাজ সেরে স্কুলে যাচ্ছিল। আচমকাই পেছন থেকে ডাম্পার ধাক্কা মারে। হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরেই সব শেষ হয়ে যায়।” অরবিন্দের অকাল প্রয়াণে সর্বস্বান্ত হয়েছে তাঁর পরিবার। স্ত্রী ও তিন বছরের এক ছোট্ট কন্যা সন্তানকে রেখে গেলেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অসহায় ভবিষ্যতের মুখোমুখি এখন সেই শিশুটি। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিক্ষক সংগঠনের সহ-সভাপতি সরোজ দাস। তিনি বলেন, “একজন নিষ্ঠাবান কর্মীকে আমরা হারালাম। কর্তব্যরত অবস্থায় এমন মৃত্যু শুধু বেদনাদায়ক নয়, গোটা ব্যবস্থার জন্য এক বড় ধাক্কা।” অরবিন্দের মৃত্যুতে প্রশাসন ও শিক্ষা মহলে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।