গুড ফ্রাইডে ২০২৫: স্মরণ করুন প্রভু যীশুর আত্মত্যাগ!
নিজস্ব সংবাদদাতা : শুক্রবার ১৮ই এপ্রিল সারা বিশ্ব পবিত্র গুড ফ্রাইডে উৎসব পালিত হচ্ছে। এই দিনটিকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ প্রভু যীশু খ্রিস্টের আত্মত্যাগ এবং তাঁর শিক্ষাকে স্মরণ করার।মনে করা হয়, এই দিনেই ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল যিশু খ্রিস্টকে। ইস্টর সানডের-আগের শুক্রবার পালিত হয় গুড ফ্রাইডে। প্রায় ২০০০ বছর আগেকার কথা। জেরুজালেমের গ্যালিলি অঞ্চলে এক সুদর্শন যুবক মানুষের কাছে মানবতা, ঐক্য ও অহিংসার মূল বাণী প্রচার করছিলেন। তিনি শুধু সুদর্শন নন, তাঁর কথাগুলিও স্বর্গীয় শোনাচ্ছিল সেদিন। একে একে বহু মানুষ জড়ো হচ্ছিল গ্যালিলি অঞ্চলে, তাঁর মহৎ উপদেশ শোনার জন্য।শুধু ধর্মীয় মাহাত্ম্য নয়, গুড ফ্রাইডে প্রেম, ক্ষমা ও আত্মত্যাগের প্রতীক।এই বিশেষ উপলক্ষে, তাঁরা কালো পোশাক পরেন, গির্জায় প্রার্থনা করেন এবং একে অপরকে জানিয়ে প্রভুর বার্তা ভাগ করে নেন।
গুড ফ্রাইডের ইতিহাস : অনেকেই একে হোলি ফ্রাইডে বা গ্রেট ফ্রাইডে বলেন। কেউ কেউ একে ব্ল্যাক ফ্রাইডেও বলে থাকেন। যিশুর ক্রুসবিদ্ধকরণ, মৃত্যু ও সমাধি থেকে তাঁর পুনরুজ্জীবনের স্মরণে এই উৎসব পালিত হয়। খ্রিস্ট ধর্মের প্রচলিত ইতিহাস অনুযায়ী, যিশুকে শুক্রবারে ক্রুসবিদ্ধ করা হয়েছিল। কিংবদন্তি বলে, ক্রুসবিদ্ধকরণ হয়েছিল ৩৩ খ্রিস্টাব্দে। যদিও এ নিয়ে নানান মত প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন ৩৪ খ্রিস্টাব্দ ক্রুসবিদ্ধকরণ হয়েছিল। মাসটি ছিল এপ্রিল, তারিখটি ৩। গুড ফ্রাইডেতে যিশু ক্রুসবিদ্ধ হন। রবিবার তাঁর রেজারেকশান অর্থাৎ পুনরুত্থান ঘটে। রাজদ্রোহের অভিযোগে যিশুকে ক্রুসবিদ্ধ করা হয়। বিদ্ধ হওয়ার পর ছ-ঘণ্টা যিশুকে ক্রুসে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। রবিবার তিনি পুনরুজ্জীবিত হন। কিন্তু মৃত্যুর দিনকে কেন গুড ফ্রাইডে বা শুভ শুক্রবার বলা হবে? নিজের মাথায় কাঁটার মুকুট পরে যিশু ভারী ক্রুসকাঠ বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন পাহাড়ে। তাতেই ক্রুসবিদ্ধ করা হয় তাঁকে। ক্রুস বহনে সাহায্য করেছিলেন সাইরিনের সিমন। যিশুকে তদানিন্তন শাসক নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করেছিল। তাই তারা যিশুকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চাইল। বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল যিশুর শিষ্য যিহুদা ইসকারিয়োত। ইহুদি সমাজপতিদের দণ্ডবিধি অনুযায়ী, যিশুর বিচার হয় এবং সাজা হয়। যিশু ক্রুসে ছ-ঘন্টা যন্ত্রণাভোগ করেন। যিশু প্রাণত্যাগ করেন। ভূমিকম্পে সমাধিপ্রস্তরগুলি ভেঙে যায়। প্রধান মন্দিরের পর্দা উপর থেকে নিচ অবধি ছিঁড়ে যায়। যে ক্রুসবিদ্ধকরণের দায়িত্বে ছিলেন, সে চিৎকার করে বলে ওঠেন, যিশু সত্য সত্যই ঈশ্বরপুত্র ছিলেন। তৃতীয় দিন অর্থাৎ রবিবার যিশু পুনরুজ্জীবিত হন। এরপর প্রতি ইস্টারের আগের শুক্রবার গুড ফ্রাইডে পালন করেন গোটা বিশ্বের খ্রিস্ট ধর্মালম্বী মানুষজন।