পর্যটন দিবসে গ্রামীণ পর্যটন স্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো জামডহরী গ্রাম!
ঝাড়গ্রাম, নিজস্ব সংবাদদাতা : .সুস্থায়ী গ্রামীণ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে, শুক্রবার বিশ্ব পর্যটন দিবসে গ্রামীণ পর্যটন স্থল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের ধড়সা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামডহরী গ্রাম। যাঁদের উদ্দ্যোগে পরিবেশ বান্ধব এবং জনকল্যাণকামী প্রকল্পের পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে তাঁরা হলেন পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ট্রপিক্যাল ইন্সটিটিউট অফ আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এবং দক্ষিণ এশিয়ার গ্লোবাল ফোরাম ফর সাস্টেনেবল রুরাল ডেভেলপমেন্ট। বিশ্ব পর্যটন দিবসে গ্রামীণ পর্যটনের স্থলের সূচনার পাশাপাশি একটি এক দিবসীয় আন্তর্জাতিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত্ হয়। অন্যান্য অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে জেলা শাসক সুনীল আগরওয়ালার অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ পর্যটন স্থলের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসনের তরফে,জেলা শাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা শাসক গোবিন্দ দত্ত। অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান আয়োজক সংস্থার সম্পাদক অধ্যাপক ড.প্রণব সাহু। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক বিনয় চন্দ। মুখ্য অতিথি ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.সুশান্ত চক্রবর্তী। আন্তর্জাতিক সম্মানীয় অতিথি ও মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের থিম্পু জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ড. ওম কাটেল। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রাম সাধু রাম চাঁদ মুর্মূ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার তথা ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে অধ্যক্ষ ড.দেবনারারণ রায়, আন্তর্জাতিক কৃষি বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড.কাঞ্চন ভৌমিক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের অধিকর্তা অধ্যাপক ড. লক্ষ্মী নারায়ণ সৎপতি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যটন ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মীর আলী সফীক,বিষ্ণুপর রামানন্দ কলেজের অধ্যক্ষ ড.স্বপ্না ঘোড়ুই, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দেবদুলাল ব্যানার্জী,কাপগাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ ড.দেবপ্রসাদ সাহু,ঝাড়গ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা পর্যটন আধিকারিক মহম্মদ আলিম আনসারি,জামবনি ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক দেবব্রত জানা, থানার আইসি বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং গ্রাম পঞ্চায়েত বিমলেন্দু মাহাতো।পরিবেশ গবেষণা সংস্থার সম্পাদক ও আয়োজক সম্পাদক অধ্যাপক প্রণব সাহু জানান, 'ঝাড়গ্রাম জেলার অন্তর্গত জামবনি ব্লকের ধড়সা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে সীমান্তবর্তী জামডহরী গ্রাম টি কোভিড অতিমারি সময়কাল ২০২০ সালের জুন মাস থেকে দত্তক গ্রাম হিসাবে গ্রহণ করি। বিগত চার বছর ধরে সুস্থায়ী কৃষি, মাছ চাষ, প্রোটিন খামার, নার্সারি হাব, ফলের বাগান, পুষ্টিবাগান, সব্জীও মশলা পাতির বাগান এবং হস্তশিল্প ইত্যাদি গড়ে তোলা হয় এবং উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পানীয় জলের সমস্যা সমাধান, রাস্তাঘাটের উন্নতি, বিদ্যুৎ পরিষেবা ইত্যাদি বিষয় গুলির উন্নতি লাভ করেছে। সর্বোপরি গ্রামীণ উন্নয়ন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের মধ্যে যথেষ্ট উদ্যোগ এবং উন্নতিকল্পে নিযুক্ত হয়েছে। সুন্দর এক প্রাকৃতিক সুদৃশ্যে মোড়া, নির্মল গ্রাম, জৈব ও দেশি শাকসবজি, এবং গ্রামবাসীদের আন্তরিকতা ও নিজস্ব লোক সংস্কৃতি গ্রামীণ পর্যটন গড়ে ওঠার আদর্শ। তাই আমাদের এই ভাবনা। এই গ্রামটির সুস্থায়ী উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই আমাদের মুল লক্ষ্য। এবং সারা বিশ্বে ঝাড়গ্রাম জেলা তথা জামডহরী গ্রাম কে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরা'। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার ও রাজ্যের বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, গবেষক ও ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন প্রায় সাড়ে তিনশো গ্রামবাসী। গ্রামবাসী দিলীপ মান্ডি ও সন্তু মাহাতো জানান গ্রামের পনের জন সেচ্ছাসেবক ও গ্রামবাসী পনের দিন ধরে গ্রামটি সাজিয়ে তোলেন। পনের টি স্টল, গোরুর গাড়ি, দোলনা, ছিপ দিয়ে মাছধরার ঘাট, জৈব আহার, বাঁশির সূর, লোক গান ও নাচ এবং থিম সং ছিল এদিনের উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরিবেশ সুরক্ষার বার্তা দিতে চারাগাছে জল ঢেলে এদিনের কর্মসূচির সূচনা হয়। দিনের বিভিন্ন সময়ে নানা আঙ্গিকের লোক সঙ্গীত ও লোকনৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।