আজ কালভৈরব জয়ন্তী!

নিজস্ব সংবাদদাতা : হিন্দু ধর্মে কাল ভৈরব জয়ন্তীর আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনে উপবাস করে ভগবান কাল ভৈরবের পুজো করা হয়।কাল ভৈরবের নামে অনেকেই ভয় পান। শিবের অন্যতম রৌদ্ররূপ কাল ভৈরব। শাস্ত্র মতে কাল ভৈরবের পুজো করলে ব্যক্তি সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পায় ও সুখ-সমৃদ্ধি লাভ করে। ২০২৪ সালের কাল ভৈরব জয়ন্তী পড়ছে ২২ নভেম্বর। অর্থাৎ শুক্রবার পড়ছে কালভৈরব জয়ন্তী। ২২ নভেম্বর, সন্ধ্যা ৬ টা ৭ মিনিট থেকে নাগাদ এই কাল ভৈরব জয়ন্তী পড়বে। অষ্টমী তিথি ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত চলবে। এর পাশাপাশি কালের ভয় সমাপ্ত হয়। অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে কাল ভৈরব জয়ন্তী পালিত হয়। একে কালাষ্টমীও বলা হয়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী এ দিন কাল ভৈরবের জন্ম হয়।
কালাষ্টমীর দিনে বেলপাতায় লাল বা সাদা চন্দন দিয়ে ওম নমঃ শিবায় লিখে শিবলিঙ্গে নিবেদন করুন। পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বেলপাতা নিবেদন করবেন। এর ফলে কাল ভৈরব প্রসন্ন হয়ে ব্যক্তির সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ করবেন।
কুকুর কাল ভৈরবের বাহন। তাই তাঁর আশীর্বাদ লাভের জন্য এ দিন কালো কুকুরকে মিষ্টি রুটি বা গুড়ের মালপোয়া খাওয়ান। এর ফলে জীবনের সমস্ত কষ্ট থেকে মুক্তি পাবেন।
এই তিথিতে ওম কাল ভৈরবায় নমঃ মন্ত্র জপ ও কালভৈরবাষ্টক পাঠ করলে ভূতৃ-প্রেত-সহ সমস্ত নেতিবাচক শক্তির প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


কিংবদন্তি অনুসারে, একবার ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব এই তিনজনের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে তর্ক শুরু হয়। সমস্ত দেবতাকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সমস্ত দেবতার মতামতে ভগবান শিব ও ভগবান বিষ্ণু সন্তুষ্ট হলেও ভগবান ব্রহ্মা অসন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শিবের প্রতি খারাপ কথা বলতে থাকেন। সমস্ত দেবতার উপস্থিতিতে ব্রহ্মার মুখে কুকথা শুনে খুব ক্রুদ্ধ হয়ে যান ভগবান শিব। এই ক্রোধ থেকেই ভগবান শিব থেকে জন্ম হয় কাল ভৈরবের। মহাদেবের রুদ্র অবতার কালভৈরবকে দেখে সমস্ত দেবতা ভয় পেয়ে যান এবং শিবকে শান্ত থাকার অনুরোধ করতে থাকেন।মহাদেব এতটাই ক্রুদ্ধ ছিলেন যে ব্রহ্মার পাঁচটি মুখের মধ্যে একটি কেটে ফেলেন কালভৈরব। এরপর ভগবান শিবের উগ্র অবতার কাল ভৈরবের কাছে ভগবান ব্রহ্মা ক্ষমা চাইলে তিনি শান্ত হয়ে যান। কিন্তু ব্রহ্মাকে হত্যার পাপের অভিযোগে শাস্তি ভোগ করতে হয় কাল ভৈরবকে। তখন ভগবান শিব তাকে তীর্থযাত্রায় যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং পৃথিবীতে তীর্থযাত্রা করেন কাল ভৈরব। বছরের পর বছর ভিক্ষুক হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করতে থাকেন তিনি। অবশেষে, শিবের শহর কাশীতে পৌঁছানোর পর, তিনি তার শেষ ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত করেন। শাস্তি ভোগ করার কারণে কালভৈরবকে দন্ডপানিও বলা হয়।