পহেলগাঁও হামলা পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ঘোড়ার চালক সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ!

নিজস্ব সংবাদদাতা : ২৮ বছর বয়সী সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ ছিলেন স্থানীয় কাশ্মীরী একজন ঘোড়ার চালক। কাশ্মীরী পহেলগাঁও বৈসারণ উপত্যকায় পর্যটকদের ঘোড়ায় করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করাতে করাতেই চলত তার জীবিকা। সে দিনে তিনি এক পর্যটক পরিবারকে উপত্যকার সৌন্দর্য ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন। ২২ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার হঠাৎ করেই ভেসে আসে গুলির শব্দ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অন্যরা যখন প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন, তখন আদিল থেমে যাননি। বরং সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তিনি এক বন্দুকধারীর দিকে দৌড়ে যান এবং তার অস্ত্র কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অনেক পর্যটক পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন পর্যটকসহ মোট ২৭ জন, যা সাম্প্রতিক সময়ের কাশ্মীর অঞ্চলের অন্যতম মর্মান্তিক ঘটনা। তবে আদিলের আত্মত্যাগ যেন এক আলোর রেখা, যা কাশ্মীরের মানুষকে নতুন করে মানবতার পাঠ পড়িয়েছে। তিনি শুধু সাহসিকতার পরিচয় দেননি, বরং প্রমাণ করেছেন, সন্ত্রাস ও ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসা ও সহানুভূতি আজও বেঁচে আছে। স্থানীয় দোকানদার ইমতিয়াজ লোন বলেন, সে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মারা যায়নি। সে মারা গেছে এমন একটি উদ্দেশ্যে, যা মানুষের হৃদয়ে লেখা থাকে। যখন সন্ত্রাসীরা আমাদের ধর্মের নামে ভাগ করতে চেয়েছিল, তখন একজন মুসলিম নিজের জীবন দিয়ে অমুসলিম হিন্দুদের রক্ষা করেছিল। এটাই কাশ্মীর, এটাই আমাদের সত্যিকারের পরিচয়। হামলার পর গোটা কাশ্মীর স্তব্ধ। গত ৩৫ বছরে প্রথমবার বুধবার কাশ্মীরে বন্‌ধ পালিত হয়েছে।

আদিল হুসেন শাহ বাবা