রজত জয়ন্তী বর্ষে খড়গপুর বইমেলা !
নিজস্ব সংবাদদাতা : আজ ১ লা ডিসেম্বর রবিবার খড়গপুর বইমেলা কমিটির আয়োজনে ও মানস গৌতম নারায়ণ চৌবে মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর সহায়তায় খড়গপুর বইমেলা এবার রজত জয়ন্তী বর্ষে পড়তে চলেছে। বইমেলা কমিটির পক্ষ থেকে নবনির্মিত অফিস গৃহ প্রাঙ্গনে পয়লা ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সাংবাদিক সভায় বইমেলার অনুষ্ঠানসূচী উপস্থিত সদস্য সদস্যরা তুলে ধরেন। এদিনের সভায় সভাপতি তথা প্রাক্তন অধ্যাপক তপন পাল বলেন-আমাদের সমাজকে বাঁচিয়ে রাখে বই। এই রজতজয়ন্তী বর্ষে ঝাড়গ্রাম সহ দুই মেদিনীপুরের মানুষের আশা থাকবে ব্যাপক। সেটা পূরণের জন্য আমরা সাধ্যমত চেষ্টায় আছি। তপন বাবু আরো বলেন প্রবীণ ব্যাক্তিরা বই ছাড়া ভাবতে পারেনা। বর্তমানে মোবাইলের আদব-কায়দা, রক্ত করতে না পেরে বইকে আঁকড়ে ধরে পড়ে আছে তারা। বইমেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন-গৌতম চৌবের হাত ধরে প্রথম বর্ষের বইমেলা শুরু হয়েছিল। তিনি মারা যাওয়ার পর বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতে ২৫ তম বর্ষে পৌঁছলাম। এবছর সারাদেশের নারী নির্যাতনের দিক তুলে ধরতে বড়দের জন্য এ বিষয়ে প্রবন্ধ ও ছোটদের বিভিন্ন রকম প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এ বিভাগে সফলদের অন্যান্য বছরের মত এ বছরও স্কলারশিপের ব্যবস্থা থাকছে। ২৫ তম বর্ষ কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিশেষ লোগো ও থিম সং-খড়গপুর বইমেলা ভালোবেসে/ইতিহাসে গুটিগুটি পায়ে/আমরা পঁচিশে/চলো যাই মিলেমিশে...। গেছেন শিল্পী লগ্নজিতা ও অর্ক চট্টোপাধ্যায়।এছাড়া ভাষা ও ভাবনা নিয়ে অরূপ সংকর মৈত্রর ছোটলোক ও ভদ্রলোক বাংলা কথা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী একটি বই বেরোচ্ছে। জানুয়ারি ৩ তারিখে প্রাক উদ্বোধনে কিছু প্রবাসী ও খড়্গপুরের বিশিষ্ট মানুষদের সম্বর্ধনা দেয়া হবে। তিনি বলেন আর্থিক অনটনের জন্য এবছর ১০০ টাকার কুপন বই ছেপে সাড়ে তিন হাজার মানুষের কাছে অনুদান চাইছি। দেবাশীষ বাবু সংযোজন করেন-যেসব পাঠকরা বই ক্রয় করবে নির্দিষ্ট শব্দের উপর ওই বই সংক্রান্ত মতামত জানাতে পারবেন। তার মধ্য থেকে কিছু জনকে আমরা বইমেলা কমিটির পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করবো। অন্যতম সদস্য মৃণাল শতপথী বলেন -রজত জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন করা বইমেলার একটি বড় ব্যাপার ।আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে আরও বেশি মানুষকে বইমুখী করার। ছোট পত্রিকা প্রসঙ্গে এ বছরের ভাবনায় তিনি বলেন-আমরা ঝাড়গ্রাম সহ দুই মেদিনীপুরের নামে লিটিল ম্যাগাজিন গুলির সম্পাদকদের আহ্বান করছি। যাতে তারা বইমেলার বড় করে তৈরি লিটল মেঘ প্যাভিলিয়নে তাদের পত্রিকাগুলিকে মেলে ধরতে পারেন। ইতিপূর্বে এই আহ্বানে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে তিনি জানান। এবছর পরিকল্পনা সফল হলে আগামী বছর লিটিল ম্যাগাজিন মেলা করার ইচ্ছে আছে। আজকের সঞ্চালক তথা বইমেলা কমিটির অন্যতম সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন মূলমঞ্চ ছাড়াও আরো একটি মঞ্চ থাকবে যেখানে পাঠক লেখক প্রকাশকরা তাদের মতবিনিময় করবেন। এছাড়া আরও একটি প্যাভিলিয়নে হবে ফিরে দেখা, যেখানে ২৫ বছরের পথ চলার কোলাজ থাকবে। প্রসঙ্গত গিরি ময়দান স্থিত গীতাঞ্জলি কমিউনিটি হলের প্রাঙ্গনে এ বছর বইমেলা শুরু হচ্ছে ৩রা জানুয়ারি থেকে চলবে ১২ই জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত। ৩রাজানুয়ারি থাকছে খড়গপুর সহ বাইরের কিছু মানুষকে সম্বর্ধনা। ৪ ঠা জানুয়ারি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা মেলার উদ্বোধন ও সন্ধ্যায় থাকবে হায়দার আলী হোসেনের সানাই বাদন। ৫ই জানুয়ারি থাকবে ভুমি ব্যান্ড খ্যাত সুরজিৎ ও তার বন্ধুরা মিলে গাইবেন বিভিন্ন ফোক গান। ৬ই জানুয়ারি থাকবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরকুমার সভার নাট্যরূপ। যাতে অভিনয় করবেন বিজয় লক্ষী বর্মন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী উর্মি মালা বসু ও অন্যান্য দিকপালেরা। গানে থাকবেন শ্রীকান্ত আচার্য ও জয়তী চক্রবর্তী। ৭ই জানুয়ারি থাকবে রাজু দাস বাউলের বাউল গান। ৮ই জানুয়ারি বিশিষ্ট হিন্দি ছবির অভিনেতা আশীষ বিদ্যার্থী ও তার সম্প্রদায়ের হিন্দি অনুষ্ঠান। ৯ই জানুয়ারি থাকছে আলতাফ রাজার কাওয়ালী অনুষ্ঠান। ১০ ইজানুয়ারি জি সারেগামাপাখ্যাত সেজুতি দাসের গান থাকবে। ১১ই জানুয়ারি ইমন চক্রবর্তীর বাংলা গান। ১২ ই জানুয়ারি সমাপ্তি অনুষ্ঠানে হিন্দি সা রে গা মা পার সঞ্চালক সলমন আলীর গান। এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেবাশীষ দে, সৌমেন চক্রবর্তী, মৌসুমী সরকার, দেবদাস ব্যানার্জি, কৃশানু আচার্য, উমেশ সিং, কাউন্সিলর বিহরীর এবং অপূর্ব ঘোষ।