মানবসেবার অনন্য নজির গড়লেন খড়গপুর মালঞ্চর যুবক অভিনব দাশগুপ্ত!
অরিন্দম চক্রবর্তী: শিক্ষার পরিবেশ ও সমাজসেবার মহামন্ত্র নিয়ে বাড়িতে বড় হয়ে ওঠা তার। চোখের সামনে কোন মানুষ বিপদে পড়লে আগে পিছে না ভেবে তৎক্ষণাৎ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। শত বাধার মাঝেও জয় শিব শম্ভু ও জয় শ্রী কৃষ্ণ বলে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি অভিনব দাশগুপ্ত খড়গপুর মালঞ্চ বালাজি মন্দির পল্লী নিবাসী এই যুবক। পেশায় তিনি সাধারণ একজন মানুষ হলেও, তাঁর হৃদয়ের ভিতর লুকিয়ে আছে অসাধারণ এক মানবিক শক্তি।জানা গেছে গত ২৯শে আগস্ট এক আত্মীয়ার চিকিৎসা করাতে মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ছিলেন। গভীর রাতে বিশেষ কারণে নার্সিংহোমের বাইরে আছেন তিনি। পাগলের মত সারি সারি বন্ধ ঔষধ দোকানের সামনে ঘুরতে দেখেন এক বিপদগ্রস্ত মানুষকে। তাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশনে কয়েকটি ঔষধ লিখে দিয়েছেন ডাক্তার বাবুরা। তৎক্ষণাৎ এই কয়েকটি ঔষধ না আনলে জীবন মরণ আশঙ্কা রয়েছে তার স্ত্রীর। গরিব ওই মানুষটিকে দেখে অভিনবর মনে মানব সেবার ইচ্ছে নড়েচড়ে ওঠে। নিজের বাইক বের করে খড়্গপুরের সমস্ত নামকরা ঔষধ দোকানে যায়। রাত ২.৩০ মিনিটে খোলা থাকে না এইসব দোকান। প্রায় ৩৫ কিলোমিটার ঘোরার পর চট করে বুদ্ধি খেলে যায় মাথায় ,ছোটেন মালঞ্চ রোডের অ্যাপেলো ঔষধ দোকানের একটি শাখায়। ওনাদের সহযোগিতায় গিরি ময়দান স্থিত একটি নার্সিংহোমের ঔষধ দোকান থেকে মেলে প্রয়োজনীয় ঔষধ গুলি। তড়িঘড়ি করে ঔষধ সমেত বিপদগ্রস্ত লোকটিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন তিনি। সময় মত এসে পড়ায় পিঠ চাপড়ে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান অপারেশন থিয়েটারে থাকা কর্তব্যরত নার্স ও ডাক্তার বাবুরা। জীবনে অনেক বড় হবে মাথায় হাত রেখে এই আশীর্বাদ করেন বর্ষীয়ান ডাক্তারবাবুরা। সাক্ষাৎ ভগবান বলেও উনারা প্রশংসা করেন ডাক্তারবাবুরা। বিপদের সময় এমন দেবদূতের আবির্ভাবে অভিনব দাশগুপ্তের হাত জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন বিপদগ্রস্ত মানুষটি। তবে অভিনব এমন ভালো কাজ করেও নির্বিকার রয়েছেন হাসিমুখে। স্বামী বিবেকানন্দের মানবসেবার আদর্শ ছিল আধ্যাত্মিকতা ও বাস্তবতার, যেখানে তিনি ঈশ্বরকে মানবজাতির মধ্যে দেখেছিলেন এবং মানব সেবাকেই ঈশ্বরের আরাধনা বলে মনে করতেন।জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর - স্বামী বিবেকানন্দ।