খড়্গপুর নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক বিরুদ্ধে মিড ডে মিল দুর্নীতি ও অন্যান্য দুর্নীতি!

পশ্চিম মেদিনীপুর নিজস্ব প্রতিবেদন : মিড ডে মিল দুর্নীতি ও অন্যান্য দুর্নীতি নিয়ে সিবিআইয়ের কাছে যেতে পারেন বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপককুমার দাশগুপ্ত । খড়গপুর মহকুমা আদালতের সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন) পরাগ নিয়োগী শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপককুমার দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক চন্ডীচরণ ত্রিপাঠীর দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন।২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপককুমার দাশগুপ্ত তথ্য জানার অধিকার আইনে নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক চন্ডীচরণ ত্রিপাঠীর কাছে একটি আবেদন করেন। এদিকে পুরনো একটি আবেদনের ভিত্তিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসকের গ্রিভ্যানস সেল দীপকবাবুর কিছু প্রশ্নের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা দফতর অর্থাৎ ডিআইয়ের দফতরে একটি চিঠি পাঠান। দীপকবাবুর পাঠানো কিছু তথ্যও ডিআইয়ের অফিসে পাঠায় গ্রিভ্যান্স সেল। কিন্তু প্রায় দু বছর কেটে গেলেও ডিআই দফতর কোনো জবাব গ্রিভ্যান্স সেলের কাছে পাঠায়নি। প্রথমে বলা হয় ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বলা হয় ফাইলের ভিতরের তথ্যগুলি পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারী অফিস থেকে ফাইল, কাগজ হাপিস হয়ে গেল অথচ ডিআই পুলিশে অভিযোগ না জানিয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলেন ব্যাপারটা সন্দেহজনক নয়কি? একটা কথা পরিষ্কার ডিআই দফতর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে অপারগ। কিন্তু স্বপন সামন্ত ডিআই হয়ে আসার পরে দফতর খানিকটা নাড়াতে পেরেছেন, এমন ঈঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ডিআইয়ের অফিসে যে ঘুঘুর বাসা সেই বাসা ভাঙ্গা খুব সহজ নয়। চন্ডীচরণ পাঠকদের মনে থাকতে পারে নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠের মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতি চলছে বলে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন স্কুলের পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সদস্য কমল মাইতি। ২০১৮ সালে দীপকবাবু যখন স্কুল মিড ডে মিলের বিষয়টিও টেনে আনলেন। মিড ডে মিলে গরমিল আছে বলে তিনি জেলা শাসকের কাছে অভিযোগও জানালেন। তৎকালীন জেলা শাসক পি. মোহন গান্ধী দীপকবাবুর ভূয়সী প্রশংসা করে মিড ডে মিল নিয়ে তদন্তের জন্য সর্ব শিক্ষা মিশনের দুই আধিকারিককে নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠে পাঠালেন। সেই দুই আধিকারিক শুধু মাত্র প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললেন। তারা পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী, স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবক, মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক, পরিচালন সমিতির সদস্য বা অভিযোগকারী কারো সঙ্গেই কথা না বলে চলে গেলেন। সেই রিপোর্ট কিরকম হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। রিপোর্ট দিনের আলো দেখার আগেই প্রধান শিক্ষক প্রচার শুরু করলেন তিনি ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছেন। দীপকবাবু স্কুল এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার করছেন। এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন স্কুলের মিড ডে মিলের দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু করছে। নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠে অভিযোগ ছিল স্কুলের উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় সংখ্যা বেশী দেখিয়ে বরাদ্দ বাড়ানো এবং এইভাবে একটি সরকারি প্রকল্পের গলাটা ধীরে ধীরে টিপে ধরা। মুশকিল হচ্ছে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে দীপকবাবু এই অভিযোগ জানালেও বা জেলা শাসক নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতর নড়েচড়ে বসেনি। এটাই দুর্ভাগ্যের। আজকে আবার বড় হয়ে উঠছে মিড ডে মিলের অভিযোগ। সিবিআইয়ের লম্বা হাত যদি নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠেও এসে পৌঁছায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। দীপকবাবু জানিয়েছেন তিনি তাদের অভিযোগ সিবিআইয়ের কাছেও রাখবেন কিনা সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।আরটিআই আবেদনের ভিত্তিতে চন্ডীবাবু যে জবাব পাঠিয়েছেন তা অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। দীপকবাবু যে তালিকা চেয়েছেন তা কেন চন্ডীবাবু দিতে পারছেন না? তালিকা সামনে এলেই বোঝা যাবে মেধার ভিত্তিতে একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয়েছিল না হয়নি। তাহলেই তো দুধ কা দুধ, পানিকা পানি হয়ে যাবে। চন্ডীবাবুর এড়িয়ে যাওয়ার পিছনে কি রহস্য আছে?