ইডেনে নাইটদের বাদশাহী জয়!
নিজস্ব সংবাদদাতা : ম্যাচটা ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের। কিন্তু ম্যাচটার জিয়নকাঠি ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আর শাহরুখ খানের হাতে। একসময়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ। তার পরে ঘটনার ঘূর্ণাবর্তে তিনি নাইট ড্রেসিং রুম ছেড়ে চলে যান পুণেতে। এক যুগ আগে সৌরভের পুণে আর কেকেআরের সেই ম্যাচ এখনও মনে আছে সবার। সেদিন সব অর্থেই বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল। সৌরভ এখন দিল্লি ক্যাপিটালসের ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট। সেই তিনি ইডেনে আসা মাত্রই সৌরভে মাতোয়ারা এই শহর। সোমবার রাতটা অবশ্য দিল্লির ছিল না। রাতটা কেকেআরেরই।
এদিন টস জিতে ঋষভ পন্থ প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরু থেকে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল দিল্লি। বড় রান করতে পারেলন না কেউই। জেক ফ্রেজার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ঝড়ো ব্যাটিং করেছিলেন। এদিন তাঁর ব্যাট শান্ত থেকে যায়। দিল্লির ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান কেবল কুলদীপ যাদবের। তিনি ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে যান। অধিনায়ক ঋষভ পন্থ করেন ২৭ রান। দিল্লি ইনিংসকে ভাঙার পিছনে রয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলাররা।
মিচেল স্টার্ককে গত ম্যাচে ডাগ আউটে রেখে খেলতে নেমেছিল কেকেআর। এদিন স্টার্ক খেলেন। ৪৩ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট নেন স্টার্ক। ফ্রেজারকে ফিরতে হয় অজি তারকা বোলারের বলে। রহস্য স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী ১৬ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন। বৈভব অরোরা ও হর্ষিত রানা ২টি করে উইকেট নেন। নাইট বোলাররা আগ্রাসী বোলিং করেন। এই আগ্রাসী বোলিং-ব্যাটিং দেখতে চেয়েছিলেন শাহরুখ খান। ম্যাচের এক দিন আগেই তিনি চলে এসেছিলেন শহর কলকাতায়। ছেলে আব্রামকে ক্রিকেটের সহজ পাঠও দিতে দেখা যায় কিং খানকে। এদিন তাঁর সামনেই নাইটরা দাপট দেখালেন। কেকেআর বোলারদের দক্ষতায় ১৫৩ রান করে দিল্লি ক্যাপিটালস।সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে ঝড় তোলেন ফিল সল্ট। ওপেন করতে নেমে তিনি এবং সুনীল নারিন ৭৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। সুনীল নারিন অবশ্য আগের দিনের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পারেননি। ১৫ রানে তিনি ফেরেন অক্ষর প্যাটেলের বলে। নারিন, সল্ট, রাসেলদের দাপটের জন্য রিঙ্কু সিং ব্যাট করার বিশেষ সুযোগ পাচ্ছেন না। এদিন তাঁকে তিন নম্বরে পাঠানো হয়। বিশ্বকাপের দল ঘোষণা এখনও হয়নি। শাহরুখ খান কিন্তু নির্বাচকদের উপরে চাপ বাড়িয়ে রাখলেন। আইপিএলের সম্প্রচারকারী সংস্থার কাছে সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছেন, ”আমি চাই রিঙ্কু বিশ্বকাপের দলে থাকুক।”এদিন রিঙ্কু যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছে কেকেআর শিবির। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১৫৩ খুব একটা বড় রান নয়। তার উপরে ফিল সল্ট বিধ্বংসী ব্যাট করতে থাকেন। দিল্লির বোলারদের মাঠের যত্রতত্র ফেলতে থাকেন। ফলে রিঙ্কুর উপরে সেই চাপ ছিল না। সল্ট (৬৮) মারতে গিয়েই অক্ষর প্যাটেলের বলে আউট হন। কেকেআরের রান তখন ২ উইকেটে ৯৬। রিঙ্কুও রান পেলেন না। ১১ রানে ফেরেন তিনি। অবশ্য ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি কলকাতা নাইট রাইডার্সের। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন। বাকি কাজ শেষ করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানে থামে দিল্লির ইনিংস ৷ এই জয়ের পর ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ কার্যত নিশ্চিত করল কেকেআর ৷