কোটশিলা স্টেশনে কুড়মি আন্দোলনে তীব্র উত্তেজনায়: ২ আইপিএস জখম, গ্রেপ্তার ২৯ জন...

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের কোটশিলা রেল স্টেশনে আদিবাসী কুড়মি সমাজের বিক্ষোভ হিংসাত্মক রূপ নেওয়ায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। আন্দোলনকারীদের হামলায় জখম হয়েছেন দুই আইপিএস অফিসার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এছাড়া আলাদাভাবে জিআরপির হাতেও গ্রেপ্তার হয়েছে। ধৃতদের সকলকেই রবিবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হয়। তাদের মধ্যে বেশ কিছু কুড়মি নেতা-কর্মী- সমর্থকদের যেমন পুলিশ হেফাজত হয়েছে। তেমনই জেল হেফাজত হয়। উল্লেখ্য, কুড়মি সমাজ দীর্ঘদিন ধরেই তাদের জাতিগত স্বীকৃতি এবং অন্যান্য সামাজিক দাবির পক্ষে আন্দোলন করে আসছে। তবে গতকালের হিংসাত্মক আচরণ প্রশাসনের কাছে চরম উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আন্দোলনকারীরা শিশু এবং মহিলাদেরকে সামনে রেখে আমাদের উপর রেল লাইনের ট্র্যাকে থাকা পাথর ছুঁড়ে আঘাত করা হয়। সেই কারণেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে দেরি হয়। আমাদের বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হন।” সমাজ মাধ্যমে পুলিশি নির্যাতনে একটি শিশুর মাথা ফাটার ছবি দেখিয়ে নিন্দা করা হয়। এই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার বলেন, “এই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু কোথায় কোন শিশু জখম হয়েছে, এই ব্যাপারে আমরা সকাল থেকে নানান খোঁজখবর করার পরেও কোনও কিছু খোঁজ পাইনি। অনুরোধ করছি কোন সহৃদয় ব্যক্তি যদি আমাদেরকে এই বিষয়টি জানান আমরা তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেব। কিন্তু অযথা বিভ্রান্তিমূলক যদি সমাজ মাধ্যমে ছড়ানো হয় তাহলে আইনত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান,"হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কাজ করেন পুলিশ। কেউ যদি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেন সেটাতে তাদের বাধা দেওয়ার কোন প্রশ্ন-ই ওঠে না। অতীতেও এই সংগঠন হুলহুলিটাড়ে সমাবেশ করেছিল। সেখানে তাদের সব রকম সহায়তা করা হয় পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তরফে। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” রবিবার আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো জানান, “আমাদের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের উপর ব্যাপক পুলিশি সন্ত্রাস চলছে। সেই জন্য নেতা-কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। কান্টাডিতে যেসব গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেই গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।” অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা মণীন্দ্র ঘাসি বলেন, “পুজোর মুখে এরকম রেল অবরোধ আমরা সমর্থন করি না। যারা অন্যায় ভাবে এই অবরোধ করেছিল তাদের জন্যই আজকে গ্রামের অবস্থা ঠিক নেই।”