"লাশবাহী কফিন" -মহিবুল আলম

আমার মৃত্যু হলে আমার লাশটা আমি কাঁধে নিয়ে হাঁটবো।
আমার কফিনবন্দি লাশ। চারিদিকে লোবানের ঘ্রাণ। দক্ষিণের শিস দেওয়া বাতাস।
দুপুরের সন্ধিক্ষণ শেষে বিকেলের রোদটা যখন পুবের দেয়াল ঘেঁষে আড়াআড়ি
কামরাঙা গাছটার দেহ বেয়ে একটু একটু নামবে।
আমি লাশ নিয়ে কোনো একটা কবিতা লিখবো।

আমি লাশবাহী কফিনটা নিয়ে একাই হাঁটবো। একটা দিঘল বিকেল-
বিকেলের গায়ে বৃক্ষশোভিত একটা পথ। চারিদিকে পাখিদের কলতান।
লাশের শরীর বেয়ে ওঠা বিকেলের প্রশান্তির রোদটুকু ঝিকিমিকি আলোতে রাস্তায়
ক্রমাগত নৃত্য করবে। অসংখ্য ঝিঁঝিঁপোকা নিস্তব্ধতার সিঁড়ি বেয়ে নাকি সুরে ডাকবে।
আমি লাশ নিয়ে কোনো অবান্তর গান বাঁধবো।

আমি লাশবাহী কফিন কলার ভেলায় ভাসিয়ে সীমান্তের ওপারে যাবো।
সূর্য ডুবে গিয়ে সমুদ্রের যেখানে শেষ হয়। শরীরের যেখানে অপরিসীম গ্লানি-
তীরের আছড়ে পড়া ঢেউয়ের ভেতর ক্লান্তির চিহ্ন।
আমি লাশ নিয়ে বেহুলার গল্প ফাঁদবো। রূপবানের গল্পও।
আসলে রূপবানের বা বেহুলার গল্প অলীক।
আমি শ্রান্ত শরীরে জলের ভেতর পা ভিজিয়ে বলবো, লাশের রাজনীতিতে
রাষ্ট্রযন্ত্রের কোনো গল্পই হয় না। আমার লাশেরও না।