রাজ্য স্বীকৃতির দাবিতে উত্তাল লাদাখ, বিজেপি অফিসে অগ্নিসংযোগ,মৃত চার-আহত বহু...

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে ফের অশান্ত হয়ে উঠল লাদাখ। বুধবার লেহ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয় যে বিক্ষোভকারীদের একাংশ বিজেপির পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত বহু। প্রশাসন ইতিমধ্যেই কার্ফু জারি করেছে এলাকায়। লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনের অন্যতম মুখই ওয়াংচুক। তাঁর বক্তব্য, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। লাদাখের জন্য একটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হোক। সেই সঙ্গে লেহ এবং কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসনের বন্দোবস্ত করা হোক। এমনই নানা দাবি নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বেশ কয়েক বার অনশনেও বসেছেন। সূত্রের খবর, আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগেই এই বিক্ষোভ নতুন করে অশান্তির আবহ তৈরি করল। এদিন লেহ শহরে রাজ্য স্বীকৃতি ও চাকরির ক্ষেত্রে স্থানীয়দের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের দাবিতে রাস্তায় নামে একদল যুবক। ধীরে ধীরে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেই বিক্ষোভ চলাকালীনই উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। অভিযোগ, বিজেপি অফিসে হানা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। হিংসায় এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। শহর জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী।

বুধবারের প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি (এল এবি)-র যুব শাখা। ওই সংস্থার চেয়ারম্যান থুপস্তান সোয়াং বলেন, ‘‘লাদাখে মূলত চারটি দাবিতে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছি। কিছু ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে আন্দোলন সহিংসতার চেহারা নেয়। সেই সময় আমাদের কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা লাদাখের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, মৃত তরুণদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’’ প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, "অশান্তি ছড়ানো যে কোনও চেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা হবে।" লাদাখের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছেন। জম্মু-কাশ্মীর থেকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর থেকেই এই দাবি তীব্র হচ্ছে। স্থানীয় সংগঠন ও নেতাদের অভিযোগ, কেন্দ্র শুধু আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু বাস্তবে কোনও পদক্ষেপ করছে না। তারই প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে— বৈঠকের আগে এই হিংসা কি ইঙ্গিত দিচ্ছে লাদাখে অস্থির সময়ের? কেন্দ্র কীভাবে সামলাবে পরিস্থিতি, এখন তাকিয়ে দেশবাসী।