শেষ দেখায় চোখে জল!

নিজস্ব প্রতিবেদন : একটা যুগের অবসান। নিপাট ভদ্র মানুষ। ১০০ শতাংশ বাঙালিয়ানা। সাদা ধুতি পাঞ্জাবি। সহজ সরল জীবন। জ্যোতি বসুর পরবর্তী পর্যায়ে এক অন্যরকম মুখ্য়মন্ত্রী দেখেছিল বাংলা। যিনি আবেগপ্রবণ। যিনি কথায় কথায় সংস্কৃতির কথা বলতেন। নন্দনে যেতেন। পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট ফ্ল্যাটে থাকতেন। অনাড়ম্বরহীন জীবন। আলোকময় একটা জীবন। সেখানে বাহুল্যতা নেই। আছে একরাশ আবেগ। আর খাদহীন সততা।


সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় প্রথমজন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বাম রাজনীতির অন্তিম নক্ষত্রসম। তুল্যমূল্য বিচার হয় না। তবে তাঁদের মধ্যে কী এক বন্ধন ছিল, তা অনুভব করতেন তাঁরাই! আর আমজনতা দেখতেন দুই প্রজন্মের দুই প্রতিনিধির অমলিন বন্ধুত্ব। এমনিতেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর বিশেষ স্নেহধন্য ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক। যে কোনও ম্যাচের আগে-পরে সৌরভের সঙ্গে কথা বলতেন বুদ্ধবাবু। বলতেন আজকের পারফরম্যান্স, ক্রিকেট ইতিহাসের কথা। সৌরভ বলছেন, ”আমার সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে বিস্তর আলোচনা হত। আমি তখন ক্যাপ্টেন ছিলাম। যতবারই কথা হয়েছে, ক্রিকেট নিয়েই উনি কথা বলে গিয়েছেন। শুধু সমকালীন ভারতীয় ক্রিকেট নয়, পঙ্কজ রায়ের ব্যাটিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে আমাদের মধ্যে। খেলাপাগল মানুষ ছিলেন।” একইসঙ্গে সিনেমার প্রতি তাঁর আবেগের কথাও বললেন সৌরভ। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর থেকে যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। কিন্তু যখনই সৌরভের সঙ্গে দেখা বা কথা হতো, একেবারে আপনজনের মতো খবরাখবর নিতেন বুদ্ধবাবু। তবে একটি দিনও ক্রিকেটার সৌরভকে রাজনীতির কথা বলেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এটাই ছিল তাঁর বিশেষত্ব। ইদানীং ক্রীড়াবিদ বা খেলোয়াড়দের কাছে রাজনীতির ময়দানে নামার প্রস্তাব আসে অহরহ। কিন্তু বুদ্ধ-আমলে কখনও এই সংস্কৃতি ছিল না বলেই জানাচ্ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় । সেই ভদ্রতা, সৌজন্যের ইতি ঘটল আজ।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের লেটার বক্স
 গাড়ির নম্বর প্লেটে জ্বলজ্বল করছে WB06002