বেপরোয়া গতির উলুবেড়িয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু তিন পড়ুয়া,মেদিনীপুর শহরের অভিভাবকরা সজাগ হয়ে উঠেছে!
পশ্চিম মেদিনীপুর সেখ ওয়ারেশ আলী : প্রসঙ্গত সোমবার ২৪শে নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়া ১ নং ব্লকের বহিরা শ্মশানতলায়। স্কুল ছুটির পর পড়ুয়াদের একে একে নামিয়ে আসছিল পুলকার। মুহূর্তে ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা! আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুলকার গিয়ে পড়ে রাস্তার পাশের এক পুকুরে। ডুবন্ত গাড়ি থেকে কোনওক্রমে বেরিয়ে আসতে পারে দুই শিশু। কিছুক্ষণ পর বাকি তিন খুদের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। মৃত তিন পড়ুয়া হল নার্সারির অরিন দে (৬), কেজি ওয়ানের ইশিকা মণ্ডল (৭) এবং চতুর্থ শ্রেণির শৌভিক দাস (১১)। প্রত্যেকের বাড়িই বহিরা গ্রামে। প্রত্যেকেই জগদীশপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়া। গত সোমবার উলুবেড়িয়ায় পুলকার দুর্ঘটনায় তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। সেই ঘটনার ঠিক একদিন পর, ২৫শে নভেম্বর, মঙ্গলবার, যখন মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন স্কুলে চলমান পুলকারের প্রকৃত পরিস্থিতি পরীক্ষা করাতে , তখন অনেক বেনিয়াম চোখে পরার মত।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়—অনেক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বহুদিন আগে মেয়াদোত্তীর্ণ। বেশ কিছু পুলকারে বৈধ কমার্শিয়াল গ্যাস রিফিলিং না করে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। শহরে চলা প্রায় সব পুলকারই প্রাইভেট গাড়ি—কোনোটির ক্ষেত্রেই নেই পুলকার পরিষেবার জন্য নির্ধারিত বিশেষ রেজিস্ট্রেশন।অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় পুলকার মালিকরা ইচ্ছেমতো নিয়ম ভাঙার সাহস পাচ্ছেন। তাঁদের দাবি—নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা নিলে এই বেনিয়াম অনেকটাই কমবে।
রাজ্যে আগেও বিভিন্ন জেলায় পুলকার দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। শিশুদের সুরক্ষায় সরকার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (SOP) তৈরি করলেও তা এখনো অনেকাংশে খাতায়-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে নজরদারি নেই বললেই চলে। ফলে বেশিরভাগ গাড়িচালকই কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন পড়ুয়া দেরকে নিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে দেখার বিষয় প্রশাসন কি নড়েচড়ে বসবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।