শুক্রবার সকালে মালদা পৌঁছেছেন জাতীয় কমিশন NCWও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ!
নিজস্ব সংবাদদাতা : শুক্রবার সকালে মালদা পৌঁছেছেন NCW জাতীয় কমিশনের ২ সদস্য। সার্কিট হাউসে বিশ্রামের পর বৈষ্ণবনগরে ঘরছাড়া বাসিন্দাদের সাথে কথা বলবেন তাঁরা। শুক্রবার মালদা এবং শনিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যদেরও। অন্যদিকে, শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ মালদা-মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ। শনিবার মুর্শিদাবাদের হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখবেন তিনি। সংশোধিত ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে হিংসায় জ্বলছে মুর্শিদাবাদ ও মামদার বিস্তির্ণ এলাকা। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৩ জন। আহত শতাধিক। ঘরছাড়া বহু মানুষ। লুট হয়েছে দোকানপাট, ঘরবাড়ি। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও রাজ্যপুলিশের যৌথ দল হিংসা উপদ্রুত অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। শান্তি ফিরে এসেছে কিছুটা। এমত অবস্থায় শুক্রবার সকালে মালদা পৌঁছেছেন জাতীয় কমিশনের ২ সদস্য। সার্কিট হাউসে বিশ্রামের পর বৈষ্ণবনগরে ঘরছাড়া বাসিন্দাদের সাথে কথা বলবেন তাঁরা। অন্যদিকে, শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ মালদা-মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ। শনিবার মুর্শিদাবাদের হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখবেন তিনি। রাজ্যপাল আগেই জানিয়েছিলেন তিনি সুযোগ পেলেই মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়া মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। বৃহস্পতিবার একদল ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবনে সিভি আনন্দ বোসের সাথে দেখা করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ঘরছাড়াদের পাশে থাকবার আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। মুর্শিদাবাদের শান্তি ফিরিয়ে আনাই এই মুহূর্তে তাঁর প্রধান লক্ষ্য বলেও জানিয়েছিলেন। কথা মোতাবেক পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে মুর্শিদাবাদের পথে রওনা হয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাজ্যপালের ট্রেন ছেড়েছে। প্রথমে মালদহ পৌঁছাবেন তিনি। সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নেবেন। শনিবার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান-সহ হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখবেন সাংবিধানিক প্রধান। রাজ্যপালের এই সফর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধের সুর চড়িয়েছেন। গতকাল নবান্নের বৈঠক থেকে তিনি রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, 'আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করবো, আরো কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে যান।' মুখ্যমন্ত্রী কেন এখনো মামলা-মুর্শিদাবাদ যাননি, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, 'আমি অনুরোধ করবে। বাইরে থেকে কেউ এক্লহন ওখানে যাবেন না। আমিও তো যেতে পারতাম, যাইনি। কারণ আমি গেলে অন্যরাও যেতে চাইবেন। রাজ্যের মহিলা কমিশনের টিমও যেতে চেয়েছিল কিন্তু আমি এই মূহূর্তে যেতে বারণ করেছি।' মুখ্যমন্ত্রীর দাবি। মালদা-মুর্শিদাবাদে শান্তির বাতাবরণ ফিরে এসেছে। পুলিশ-প্রশাসন নিজেদের কাজ করছে। এখন 'কনফিডেন্স বিল্ডিং'-এর সময়, আইন-শৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আশা, বিশ্বাস, ভরসা ফেরানোর সময়। তিনি ঠিক সময়ে ওইসব জেলায় যাবার আশ্বাসও দেন। এরপর রাজ্যপালের সফর নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, 'রাজ্যপাল শুধু এখানে কেন যাচ্ছেন? ত্রিপুরাতেও তো গোলমাল অশান্তি চলছে। ওখানে আমরা ক্ষমতায় নেই। তিনি ওখানে কেন যাচ্ছেন না। মণিপুর তো বহুদিন ধরেই অশান্ত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে কেন যাচ্ছেন না?' বাংলাকে ইচ্ছা করে সবাই টার্গেট করছে বলে দাবি করেন তিনি। মুর্শিদাবাদের গোলমালের পেছনে বৃহৎ ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতঅ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপাল স্পষ্ট জানিয়েছেন, 'আমি একান্তই ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাব। গোটা ঘটনার বাস্তবচিত্র চাক্ষুষ করতে যাব। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে যাতে এহেন ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। মুর্শিদাবাদের মানুষ সেখানে স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প চেয়েছেন। তাও খতিয়ে দেখা হবে।' অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য মহিলা কমিশন দলের মুর্শিদাবাদ যাওয়ায় সায় না দিলেও, বৃহস্পতিবারই কলকাতায় পৌঁছেছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দল। যার নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকর। শুক্রবার মালদা এবং শনিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। দিল্লি থেকে দল পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। ঘরছাড়াদের সমস্যার কথা শুনবেন তাঁরা। সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল সে নিয়েও কথা বলতে পারেন। গোটা ঘটনার রিপোর্ট এরপর জমা দেবেন কেন্দ্রকে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে জোড়া কমিশনের মালদা-মুর্শিদাবাদ সফর চলাকালীন রাজ্য পুলিশের ডিজিকে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল ও জোড়া কমিশনের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা হয়েছে।