'বন্ধুর মাথায় গুলি করল পুলিশ!' নেপালে ছাত্র-যুব আন্দোলনে রক্তঝরার ঘটনা, মৃত ১৯!
নিজস্ব প্রতিবেদক: নেপালে ছাত্র-যুব বিক্ষোভে ফের রক্ত ঝরল। সোমবার সকাল থেকে দেশজুড়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন ছাত্র-যুব সমাজ। সরকারের কড়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নামেন হাজার হাজার তরুণ। তাঁদের দাবি— গণতান্ত্রিক দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু বিক্ষোভ শেষ হল রক্তে ভিজে। সরকারি দমননীতি যেন আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিল। পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুলিশের গুলি চলার সময় প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াচ্ছিলেন ছাত্ররা। কেউ কেউ স্লোগান তুলছিলেন, আবার কেউ লাঠির আঘাত সামলাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় গুলিতে প্রাণ হারান একাধিক বিক্ষোভকারী। এক ছাত্র চোখে জল নিয়ে বলেন, “আমার বন্ধুর মাথা লক্ষ্য করে গুলি করল পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে।” প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নেপাল সরকার ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপ, এক্স-সহ ২৬টি সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্র বিরোধী আখ্যা দিয়ে রাস্তায় নেমেছেন দেশের তরুণ প্রজন্ম। কাঠমান্ডুর সংসদ ভবনের সামনে সোমবার সকালে থেকেই জমায়েত শুরু হয়। প্রথমে শান্তিপূর্ণ হলেও পরে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই টিয়ার গ্যাসের পাশাপাশি ছোড়া হয় গুলি। নেপালের নাগরিক সমাজ সরকারের এই আচরণের কড়া সমালোচনা করেছে। তাঁদের বক্তব্য— মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে জনগণের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও সরকারের অবস্থানকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে দাবি করেছে। বর্তমানে রাজধানীর একাধিক এলাকা সেনা ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। তবে আন্দোলন থেমে নেই। আরও বড় আকারে রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলি। সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপই শুধু বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে না বলেই মত অনেকের। কারণ, নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক দিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। দেশে আর্থিক বৈষম্য নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছিল ছাত্র-যুবদের মধ্যে। বিক্ষোভকারীদের একাংশের মতে, সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা। সেই কারণে সরকার তাঁদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে।