কেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার ফেরাতে চাইছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পাথরার ইয়াসিন পাঠান!
নিজস্ব প্রতিবেদন : ইয়াসিন পাঠান ,এক প্রাচীন মন্দির রক্ষা করেছেন তিনি।মন্দিরময় পাথরা। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা। হিন্দুদের মন্দির রক্ষা করতে গোটা জীবন লড়াই চালিয়েছেন। সেই মানুষটির কিডনি বিকল হয়েছে। টাকা নেই বলে চিকিৎসা চালানোর জন্য ভিক্ষা করতে হয়। ইয়াসিন একসময় নিজের গ্রাম পাথরার বাসিন্দাদের বুঝিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ২৫ বিঘে জমি তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু কুড়ি বছর পরও সে জমির জন্য ক্ষতিপুরণ পাননি গ্রামবাসীরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকায় হিন্দু মন্দির বাঁচিয়ে রাখতে এক মুসলমানের সংগ্রামের কথা ছড়িয়ে রয়েছে পরতে পরতে। পাথরা মানেই যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যের পীঠস্থান। ৫০ বছর ধরে মন্দির রক্ষায় লড়াই করা ইয়াসিন এখন পৌঁছেছেন বার্ধক্যে। তাঁর বয়স ৭১। মন্দির বাঁচানোর লড়াই করে ১৯৯৪ সালে পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার। সেই মানুষটি বিকল কিডনির চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে কার্যত দোরে দোরে ভিক্ষা করেন এখন। বৃদ্ধ বলেন, ‘মন্দির বাঁচানোর লড়াই করতে গিয়ে কাছের মানুষরা দূরে চলে গেলেন। মন্দিরের সমর্থকরা ভাবলেন আত্মপ্রচারের জন্য এসব করছি। যাঁদের বুঝিয়ে সরকারের হাতে জমি তুলে দিলাম, ক্ষতিপুরণ না পাওয়ায় তাঁদের কাছে খলনায়ক হয়ে গিয়েছি। এরপর রাষ্ট্রপতি পদক রেখে কী লাভ। দু’দশকে জমি মালিকদের পরিবার বেড়েছে। ভাগিদারের সংখ্যা এখন ১১৬। ইয়াসিন জানিয়েছেন, বারবার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারি কর্তাদের কাছেও গিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।বুধবার সোশাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন,বাহান্ন বছর ধরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৪২টি প্রাচীন মন্দির, স্থাপত্য রক্ষা করে বড়ই ভুল করেছি।ক্ষমা করো দয়াময় ''ঈশ্বর-আল্লাহ''। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপক ইয়াসিন পাঠান বলেন, ওয়াকফ আইন কোনওভাবে সমর্থন করতে পারছি না। তা বাদেও কোনওভাবেই এই নিয়ে হিংসা হানাহানিও মেনে নিতে পারছি না। তাই পুরস্কার ফেরাতে বাধ্য হচ্ছি।