সভামঞ্চ থেকে আবারও বাঙালি আবেগকে ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী!

নিজস্ব সংবাদদাতা : বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে ভিনরাজ্যে বাঙালিদের হেনস্তার অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই ইস্যুতে প্রতিবাদে মুখর হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এর মধ্যেই দমদমের জনসভা থেকে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে জোরালো সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দমদমের সভামঞ্চে বক্তৃতা রাখার শুরুতেই মোদীর মুখে উঠে এল, দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির, কালীঘাট মন্দিরের কথায়। কেবল তাই-ই কলকাতা ওলিগলিতে থাকা মন্দির, যেমন করুণাময়ী কালী মন্দির, দমদম বালাজি হনুমান সবার কথা উল্লেখ করলেন, সঙ্গে আবার ঠিকানা-রাস্তার নম্বর ধরেও।

কৌশিকী অমাবস্যার বিকালে মোদী বললেন, “দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির ও কালীঘাট মন্দির, শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালীমাতা মন্দির, দমদম বালাজি হনুমান, রামকৃষ্ণ সেবা মন্দির-এই সবস্থানে দেবী দেবতাদের আমার প্রণাম।প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, দিল্লি থেকে রাজ্যের জন্য যে উন্নয়নমূলক টাকা পাঠানো হয়, তা সাধারণ মানুষের কাজে লাগে না। সেই টাকা লুঠ হয়ে যাচ্ছে এবং তৃণমূলের ক্যাডারদের স্বার্থে ব্যয় হচ্ছে।

মোদীর কথায়, “অন্য রাজ্যগুলোতে স্মার্ট সিটি মিশন ও পরিকাঠামো উন্নয়ন এগিয়ে চলেছে। কিন্তু বাংলায় তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিই আটকে দিচ্ছে। প্রশ্ন হল, বাংলার শিক্ষিত, ভদ্র মানুষরা কি এমন রাজনীতি মেনে নেবেন?”প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার দমদমের সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল ও বিরোধী জোটের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বাঙালির অধিকার, নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং অনুপ্রবেশের মতো স্পর্শকাতর বিষয়।

মোদীর স্পষ্ট বার্তা, “বাংলা কাজ চায়, বাংলা মেয়েদের নিরাপত্তা চায়, কৃষকদের সম্মান চায়। আর অপরাধীদের জায়গা সরকারে নয়, জেলে। এই পরিবর্তন আনতে পারে একমাত্র বিজেপি।” তিনি আশ্বাস দেন, বাংলায় বিজেপি সরকার এলে শুরু হবে শিল্পের নবজাগরণ। দমদম-সহ একাধিক শিল্পাঞ্চলকে ফের কারখানার শহরে রূপান্তর, মেট্রো ও রেলের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, গঙ্গা ঘিরে ক্রুজ এবং হেরিটেজ ট্যুরিজমের উন্নয়ন, এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর জোরালো ঘোষণা— “বিকশিত বাংলা মোদীর গ্যারান্টি।”

সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য তুলে ধরে মোদী কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, “কংগ্রেস সেনাকে বিদেশি অস্ত্রে নির্ভরশীল করে রেখেছিল, আর বিজেপি দেশীয় অস্ত্রেই পাকিস্তানকে শিক্ষা দিয়েছে।” ইছাপুরে অত্যাধুনিক রাইফেল উৎপাদনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি দাবি করেন, প্রতিরক্ষা শিল্প বাংলায় নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে এবং স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থানের দরজা খুলছে।অনুপ্রবেশ ইস্যু তাঁর ভাষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল। মোদীর অভিযোগ, “অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, কৃষকদের জমি দখল করছে, মা-বোনেদের উত্যক্ত করছে। বাংলার ডেমোগ্রাফিক চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। একমাত্র বিজেপিই এই অনুপ্রবেশ রুখতে সক্ষম।” পাশাপাশি তিনি তৃণমূল, কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটের একাধিক দলকে তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে লিপ্ত বলে আক্রমণ করেন।