অভয়া কি সত্যি বিচার পেল? সম্পাদকীয়
বিচার তো হলো, সাজা ঘোষণাও হলো কিন্তু অভয়া কি সত্যি বিচার পেল ? এই বিলিয়ন ডলারের প্রশ্নটিই তাড়িয়ে বেড়াবে শাসক তাড়িত ভারতের তদন্ত ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থাকে। যে লক্ষ কোটি মানুষ আর জি কর মেডিক্যা ল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ খুনের ন্যায় বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছিল এবং রাত জেগেছিল এরপর তারা কি এই তদন্ত ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারবে কি? তদন্তের নামে, বিচারের নামে এই প্রহসন ন্যায় বিচারের প্রত্যাশাকে চিরতরে মুছে দেবে না তো? একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থা দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির গ্রাসে এতটাই বিপন্ন হয়ে পড়েছে যে নাগরিকদের ন্যায় বিচার দিতে বা অপরাধীদের যথাযোগ্য সাজা দিতে অপারগ হয়ে উঠছে!এই প্রশ্নগুলিই এখন ভারতের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সামনে সবচেয়ে জরুরি। গত বছর ৯ আগস্ট সকাল বেলায় হাসপাতালের সেমিনার রুমে পাওয়া যায় কর্তব্যরত এক তরুণী চিকিৎসকের একাধিক আঘাতের চিহ্নযুক্ত অর্ধনগ্ন দেহ। অভিযোগ ধর্ষণ করার পর খুন করে তাকে পরিপাটি করে সাজিয়ে গুছিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। প্রথমে কলকাতা পুলিশ পরে আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করে যে অভিযোগনামা পেশ করেছে তার ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের এক দাপুটে সিভিক ভলান্টিয়ারকে দোষী দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। ঘটনার পর দিন কলকাতা পুলিশ যাকে অভিযুক্ত বলে গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনার যে বয়ান হাজির করেছে কার্যত সেই বয়ানকে মান্যতা দিয়ে সেই একজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। ইতিমধ্যে কেটে গেছে প্রায় ছ’মাস।এরপর সোমবার তিলোত্তমা-কাণ্ডে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত।আরজি কর খুন ও ধর্ষণ-কাণ্ডে সাজা ঘোষণার পরও এমন প্রশ্নই তুলছেন সাধারণ মানুষ। সঞ্জয় কি সত্যিই একা দোষী? সেই প্রশ্ন বহাল রয়েছে সব মহলে। সোমবার সকালে কোর্ট চত্বরে দাঁড়িয়েও সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, তথ্য-প্রমাণ লোপাট করা হল কেন? সাজা ঘোষণার পরও একাধিক প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা। এদিন আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেও, প্রশ্নগুলো রয়েই যাচ্ছে।