“পশ্চিবঙ্গের মন্দিরগাত্রে রামায়ণ গাথা” চিত্র সম্বলিত সংস্কার ভারতীর সাংস্কৃতিক দেওয়ালপঞ্জী!

কলকাতা নিজস্ব সংবাদদাতা :  রামায়ণ ভারতবর্ষে লোকার্পণ হল “পশ্চিবঙ্গের মন্দিরগাত্রে রামায়ণ গাথা”-র চিত্র সম্বলিত সংস্কার ভারতীর সাংস্কৃতিক দেওয়ালপঞ্জী। রবিবার এবছরের দেওয়ালপঞ্জীর লোকার্পণ ও নবববর্ষ আবাহন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাকারের ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ভাষা ভবনে। এদিনের অনুষ্ঠানে সংস্থার পক্ষ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের ওড়িশি নৃত্যগুরু মোনালিসা ঘোষকে নটরাজ সম্মানে সম্মানিত করা হয় । রবিবারের এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ-এর অধিকর্তা ডঃ সরূপ প্রসাদ ঘোষ, ও চেয়ারম্যান ডঃ রাধারমণ চক্রবর্তী, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় গ্রন্থাগার কলকাতা অধিকর্তা ডঃ অজয়প্রতাপ সিং, প্রত্নতাত্ত্বিক ডঃ শুভ মজুমদার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ জয়ন্ত রায়চৌধুরী, দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের অছি কুশল চৌধুরী, স্বস্তিকা পত্রিকার প্রকাশক জয়ন্ত পাল, সংস্কার ভারতীর কেন্দ্রীয় সমিতির সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা রায়, ভারতীয় সংস্কৃতি ন্যাসের অছি সুভাষ ভট্টাচার্য ।
মন্দিরময় ভারতবর্ষের অংশ এই বঙ্গভূমিতে প্রাচীন যুগ থেকে মন্দির নির্মাণ ও মন্দিরগাত্র অলঙ্করণের পরম্পরা চলে আসছে। এই অলঙ্করণের বিষয় হিসেবে রামায়ণের কাহিনী নানাভাবে বর্ণিত হয়েছে । বঙ্গভূমির মন্দিরগাত্রে এই রামায়ণ গাথা নিয়েই প্রকাশিত হল সংস্কার ভারতীর সাংস্কৃতিক দেওয়ালপঞ্জী (১৪৩১) । এবছর মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ এবং পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহায়তায় প্রকাশিত সংস্কার ভারতী পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক দেওয়ালপঞ্জী’র সীমিত পরিসরে বঙ্গভূমির মন্দিরগাত্রে রামায়ণ গাথাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে । এই দেওয়ালপঞ্জীর অলঙ্করণ করেছেন শিল্পী অমিতাভ মুখোপাধ্যায় ও তিমির বরণ রায় । এই কাজে যারা সংস্কার ভারতীকে চিত্র ও তথ্য সরবরাহ করে সহযোগিতা করেছেন এদিনের অনুষ্ঠানে তাঁদের সকলকেই সম্মানজ্ঞাপন করা হয় । পাশাপাশি সংস্কার ভারতীর উদ্যোগে বাংলায় রাম গানের রচনা ও তাতে সুরারোপের কাজ চলছে । ইতিমধ্যেই বহুগান রচিত হয়েছে । এদিনের অনুষ্ঠানে সম্মান জানান হয় সেই সব শিল্পীদেরও । সর্বোপরি এদিনের অনুষ্ঠানে সংস্থার পক্ষ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের ওড়িশি নৃত্যগুরু মোনালিসা ঘোষকে নটরাজ সম্মানে সম্মানিত করা হয় । সংস্কার ভারতীর এবছরের দেওয়ালপঞ্জীর লোকার্পণ ও নবববর্ষ আবাহন অনুষ্ঠানের সূচনা সহ সংস্থার ভাবসঙ্গীত সহযোগে নৃত্য ও গীতের মাধ্যমে । পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাল্মীকি প্রতিভা’-র নির্বাচিত অংশ । সংস্থার শিল্পীরাই তাতে অংশ নেন । এদিনের অনুষ্ঠানে সকল বক্তাই বঙ্গভূমির সমাজ জীবনে রামের উপস্থিতি ও রামায়ণ চর্চার বিষয় তুলে ধরেন । এদিন জাতীয় গ্রন্থাগারে অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রত্যক্ষ অলঙ্করণে অযোধ্যার মন্দিরে বিরাজমান রামলালার ভুবনভোলানো মুখ ফুটিয়ে তোলেন শিল্পী শীর্ষ আচার্য । যেটি তুলে দেওয়া হয় জাতীয় গ্রন্থাগারের অধিকর্তা ডঃ অজয়প্রতাপ সিংয়ের হাতে । এদিনের সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিচলনা করেন সংস্থার দক্ষিণবঙ্গের সম্পাদক তিলক সেনগুপ্ত । জাতীয় সঙ্গীতের গানের মাধ্যমে শেষ হয় এদিনের অনুষ্ঠান ।