ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে ২রা অক্টোবর গান্ধীজীর ১৫৬ তম জন্মজয়ন্তীতে বিশেষ আলোচনা সভা!
নিজস্ব সংবাদদাতা : গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২রা অক্টোবর পর্যন্ত ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের বর্ণ পরিচয় মুক্ত মঞ্চ সংলগ্ন স্থানে পাঁচ দিন ব্যাপী দিনময়ী স্বনির্ভর মেলা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হলো।স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা কর্মীদের দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে স্বনির্ভর দলের মেলাতে হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও ফুড ফেস্টিভ্যাল ঘাটালের অধিবাসীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। এই মেলার শেষ দিনে অর্থাৎ আজ ২রা অক্টোবর জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বেলা ৩: ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হলো মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও দর্শন নিয়ে এক আলোচনা সভা। সভাতে উপস্থিত ছিলেন ঘাটাল মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস মহাশয়, এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাসপুর গান্ধী মিশন এর কর্ণধার শ্রদ্ধেয় নারায়ণ ভাই এবং প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বরুণ কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
মুখ্য আলোচক হিসেবে প্রথমেই নারায়ণ ভাই মহাত্মা গান্ধীর জন্মের পর থেকে তার শিক্ষা জীবন এবং পরবর্তীতে তার কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করেন। তাঁর দর্শন, আদর্শ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ইতিহাস তিনি তুলে ধরেন। ভারতবর্ষের সাধারণ জনগণকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে তিনি কি দিশা দেখিয়েছিলেন এবং ভবিষ্যতে ভারতের অগ্রগতি কোন্ পথে হওয়া উচিত সে সম্পর্কে তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা তিনি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।তিনি বলেন, জাতির জনক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর প্রতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের সমালোচনা তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে কিন্তু বহু মানুষ গান্ধীজীর জীবনচর্চা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান লাভ না করেই এবং বিস্তারিত ভাবে পড়াশোনা না করেই আজও অনেকেই অনেক সময় তাঁর সমালোচনা করেন যেটা কখনোই অভিপ্রেত নয় তা তিনি গান্ধীর আদর্শে নিজেকে দীক্ষিত এবং তার কর্ম পথে নিজেকে পরিচালিত একজন সেবক হিসেবে আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। দ্বিতীয় আলোচক হিসেবে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বরুণ কুমার বিশ্বাস পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কান্ডারী হিসেবে যে পথ তিনি অবলম্বন করেছিলেন সেখানে অহিংসা ও সত্যের ধারণাকে মূল অস্ত্র হিসাবে গ্রহণ করে তিনি কিভাবে দেশবাসীকে জাগ্রত করেছিলেন এবং সেই পথে যেতে গিয়ে চরমপন্থীদের সঙ্গে মতাদর্শগত পার্থক্যকে কেন্দ্র করে যে সংঘাতের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছিল তা তুলে ধরেন । তাঁর লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তাঁর আত্মদানের প্রেক্ষিত তুলে ধরে স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে আমাদের কী কী দায়-দায়িত্ব পালন করা উচিত এবং সেটা কতটুকু প্রতিপালিত হচ্ছে বা যে সকল ঘাটতি তার থেকে উত্তরণে আজকের দিনেই আমাদের তা অঙ্গীকার করতে হবে তা স্মরণ করিয়ে দেন।মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত ভাবে দুই বক্তাই জ্ঞানগর্ভ আলোচনার মধ্যে দিয়ে আজকের আলোচনা সভাটিকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করে তোলেন।