তৌহিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন পথে?
ঢাকা, জাকির হোসেন: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ঢাকা ও দিল্লির পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বৈঠক করেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর৷ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এদিকে, তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জয়শঙ্কর তার এক্স পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বৈঠক করেছি। আলোচনায় আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অগ্রাধিকার পেয়েছে৷ ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এমন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকটবর্তী পড়শি বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা গেছে। সেই টানাপোড়েনের মধ্যে এই প্রথম দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম সরাসরি কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ইস্যু, সীমান্ত হত্যা, পানি ব্যবস্থাপনা, ইলিশ রপ্তানি, বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতীয় ভিসা না দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে। এগুলোও ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের দায়িত্বশীলদের বক্তব্যও সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জেরে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। এর আগে জয়শঙ্করও জানান ভারত সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার পক্ষপাতী। দুই দেশের স্বার্থ আছে এমন বিষয়েই জোর দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। তখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নয়া দায়িত্ব গ্রহণ করে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিছু শর্তের কথা বলেন। ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার আমলে হওয়া চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হবে বলেও জানান ড. ইউনূস। নিউ ইউর্কে তৌহিদ-জয়শঙ্করের বৈঠকের আগেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েন চলার কথা স্বীকার করেন তৌহিদ। সেই টানাপোড়েনকে পিছনে ফেলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা।