বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং সব শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসতে শালবনীর গ্রামে কর্মশালা!

পশ্চিম মেদিনীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা : গতকাল শিশু দিবস উপলক্ষ্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গল অধ্যুষিত শালবনী ব্লকের জিন্দল কারখানা সংলগ্ন ২৮টি গ্রামের শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং মহিলাদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান এবং কর্মশালা আয়োজিত হল শুক্রবার। উদ্দেশ্য বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং সব শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসা। শালবনীর JSW সিমেন্ট লিমিটেডের উদ্যোগে এবং স্থানীয় চ্যাপলিন ক্লাবের পরিচালনায় জিন্দল প্ল্যান্ট সংলগ্ন এলাকায় শুক্রবার দুপুর নাগাদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুদের উৎসাহিত করতে নানা অনুষ্ঠানের সাথে সাথেই একটি সৃজনশীল ও হস্ত শিল্পের প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। অপরদিকে, কিশোরী ও মহিলাদের উদ্দেশ্যে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বার্তা দেওয়া হয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ সংক্রান্ত কর্মশালা সফল করতে তথা আইনি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় এদিন।

মূলত শালবনী ব্লকের প্রত্যন্ত এই সমস্ত এলাকায় নাবালিকাদের বিবাহ বা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশু শ্রম ও শিশু পাচার রুখে দেওয়া এবং সর্বোপরি সব শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসার জন্যই এদিনের এই অনুষ্ঠান ও কর্মশালার আয়োজন বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন শালবনীর বিডিও রোমান মণ্ডল, ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড লাইনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সুনীল কুমার বাউরি, শালবনীর জিন্দল প্ল্যান্টের হেড (প্রধান) সাজিশ জি কুরুপ, সিএসআর হেড অতনু চ্যাটার্জি, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (DLSA) আইনজীবী অঙ্কুর কর্মকার, আইনি সহায়ক কাবেরী বসু প্রমুখ। বিডিও রোমান মণ্ডল বলেন, "সচেতনতামূলক একাধিক কর্মসূচি কিংবা রাজ্য সরকারের 'কন্যাশ্রী'-র মত প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও জঙ্গলমহল শালবনীর বিভিন্ন এলাকায় এখনও লুকিয়ে লুকিয়ে নাবালিকাদের বিবাহ দেওয়া হচ্ছে। অপরিণত বয়সেই নাবালিকারা মা হয়ে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ তার বাকি জীবনেই নানাভাবে অন্ধকার নেমে আসছে। সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে গেলে এটা আমাদের প্রতিরোধ করতেই হবে।" চ্যাপলিন ক্লাবের সদস্যরা বলেন, "শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়া এবং তাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন।" জিন্দল প্ল্যান্টের আধিকারিকরা বলেন, "প্রত্যন্ত এই এলাকায় বাল্যবিবাহের হার অনেকটাই বেশি। তাই, জিন্দল প্ল্যান্ট সংলগ্ন ২৮টি গ্রামকে বেছে নিয়ে সেখানে আমরা শিক্ষা-দীক্ষার বিকাশ, বৃত্তিমূলক নানা প্রশিক্ষণ এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে কাজ করে চলেছি।"