Skip to content

অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা!

1 min read

মিন্টু চৌধুরী : “জ্ঞান অনন্ত, আর শেখার কোনো শেষ নেই”। সাংবাদিক তো অনেকেই। কিন্তু ক'জন আর মেরুদন্ড সোজা রেখে সাংবাদিকতা করতে পারে। আজ আপনাদের একজন সৎ, নির্ভীক ও সত্যব্রতী সাংবাদিকের কথা শোনাই। নাম তাঁর অধীর কুমার বসু। খড়্গপুর তথা মেদিনীপুর জেলার প্রবীণতম বিশিষ্ট সাংবাদিক। পাঠক ও সাংবাদিক মহলে এবং জনসমাজে সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর অস্ত্রে বহু সামাজিক আগাছা তিনি উৎপাটন করেছেন, নির্মূল করেছেন রাজনৈতিক বিষবৃক্ষ। আবার রোপন করেছেন বৃক্ষশিশু, যার মধ্যে তিনি দেখতে পেয়েছেন আগামী মহীরূহ - পল্লবিত, ফুল্ল-কুসুমিত। অধীর কুমার বসুর জন্ম ১৯৩৪ সালের জুলাই মাসে। পিতা ৺সরোজ কুমার বসু এবং মাতা ৺সরোজিনী দেবী। ওনারা চারভাই ও চার বোন। বাবা ছিলেন রেলের অফিসার । কর্মসূত্রে থাকতেন চক্রধরপুরের কাছে সিনি শহরে। শ্রী বসুর জন্ম সেখানেই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়েছে চক্রধরপুরের ইউরোপীয়ান প্রাইমারি ও হাইস্কুলে। শিশু বয়স থেকেই ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশোনা ও মেধাবী হওয়ার কারণে ইংরেজী ভাষায় তাঁর দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। এই দক্ষতা তাঁর পরিবেশিত সংবাদের লেখ্য ভাষাতেও প্রতিফলিত।

বহু সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন অধীর কুমার বসু। দৈনিক বসুমতী, যুগান্তর, অমৃত বাজার, সংবাদ প্রতিদিন - এমন অনেক নামী-দামী পত্রিকার যশস্বী সাংবাদিক তিনি। খড়্গপুরের বহু প্রাচীন সাপ্তাহিক পত্রিকার বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণ স্বাধীন বার্ত্তা ও স্বাধীন পত্রিকা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বহু বছর পরিচালনা করেছেন। ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক হিসেবেও তিনি নানা পত্রিকার সাথে যুক্ত থেকে স্বকীয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি ছিলেন খড়্গপুর প্রেস ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং এই সংগঠনের চেয়ারম্যান রূপে বহুদিন কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি খড়্গপুর প্রেস রিপোর্টারস্ ফোরামের চেয়ারম্যান রূপে কার্যরত।সৎ সাংবাদিক রূপে তাঁর ছিল অসাধারণ পারদর্শিতা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর কলম ছিল সোচ্চার। সততা, নিষ্ঠা ও সত্যবাদিতায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। বদনাম, ভীতি -প্রদর্শন, অর্থের প্রলোভন, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি - কোনকিছুর কাছেই তিনি নতি স্বীকার করেন নি। তাঁর লেখনীর ছিল যেমন ক্ষুরধার, তেমনি হৃদয়স্পর্শী। একবার খড়্গপুরের বুকে দক্ষিণপন্থী ও বামপন্থীদের চরম বিবাদের সময় দ্যা টেলিগ্ৰাফ পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর একটি প্রবন্ধ শান্তি -শৃঙ্খলা পুনঃ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়েছিল। তাঁর অনেক চিন্তাশীল রচনা সর্বভারতীয় বহু পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকতার সূত্রে তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি, শিল্পী -সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, মন্ত্রী -আমলা-প্রশাসক ও খেলোয়াড়ের সান্নিধ্যে এসেছেন। বস্তুত তাঁর পরিচিতি মহলের পরিধি সুবিশাল।শুধু সাংবাদিকতা নয়, বহু সমাজকল্যাণ -মূলক ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকান্ডের সাথেও তিনি জড়িত। নানা অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি ও বক্তব্য অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে। বর্তমানে বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হলেও মানসিক দৃঢ়তায় এখনো তিনি যথেষ্ট সক্রিয়। খড়্গপুর স্টেশনের বোগদায় সাংবাদিকদের আড্ডায় এখনো তিনি নিয়মিত উপস্থিত হয়ে আলোচনায় অংশ নেন এবং মতামত ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকতা ও জনসেবা-মূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি জীবনে বহু সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন এবং নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এই কৃতি ও মহান মানুষ যেন থাকেন সুস্থ, রোগমুক্ত । লাভ করুন আত্মনির্ভর দীর্ঘ জীবন। তাঁর লেখনী ও বক্তব্যর সজীবতা, দৃঢ়তা ও সত্যনিষ্ঠা বজায় থাকুক আজীবন । পরিশেষে, জানাই তাঁকে হৃদয়ের গভীর হতে উৎসারিত বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Latest

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর অর্জুনী পল্লী উন্নয়নী জ্ঞান মন্দির উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিনামূল্যের চক্ষু পরীক্ষা শিবির  কর্মসূচী!