Skip to content

মুজাফ্ফরপুরে ক্ষুদিরামের পথে ৫৪ কিলোমিটার দৌড়লেন মেদিনীপুরের অরিন্দম ভৌমিক!

নিজস্ব সংবাদদাতা : শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবসের ঠিক আগে ক্ষুদিরাম বসুর পথে ৫৪ কিমি দৌড়ালেন মেদিনীপুরে অরিন্দম ভৌমিক। মুজাফ্ফরপুরে বোমা ছোঁড়ার পরে ক্ষুদিরাম বসু যেভাবে সারারাত দৌড়ে সেখান থেকে পুসা স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছিলেন, ঠিক সেইভাবেই দৌড়ালেন মেদিনীপুরের অরিন্দম ভৌমিক। বহুদিন থেকেই অরিন্দমের মনের মধ্যে এই বাসনা পোষণ করতেন। সেই ইচ্ছেপূরণ করতে এবার ৯ ই আগস্ট ভোরে মুজাফ্ফরপুরের 'শহিদ ক্ষুদিরাম স্মারক স্থল' থেকে যাত্রা শুরু করে সেদিনই পুসা রোড়ে পৌঁছালেন অরিন্দম। সেখানে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান সেখানকার ক্ষুদিরাম প্রেমীরা।

অরিন্দম জানান, রেলওয়ে ট্র্যাক দিয়ে যেতে চাইলেও রেলওয়ের অনুমতি মিলেনি বলে তিনি রাস্তা দিয়েই এই পথ অতিক্রম করলেন। রেলওয়ে ট্র্যাক দিয়ে দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার হলেও অরিন্দমকে কিন্তু দৌড়োতে হলো প্রায় ৫৪ কিলোমিটার পথ। মুজাফ্ফরপুর এবং পুসা স্টেশনের মধ্যে থাকা ৬ টি রেলস্টেশনেই তিনি যান। অর্থাৎ রাস্তা দিয়ে স্টেশনে যান এবং আবার পরের স্টেশনে যাওয়ার জন্য রাস্তা ধরেন। তিনি জানান, তাঁর এই দৌড়ের উদ্দেশ্য হলো শহীদ ক্ষুদিরামের আদর্শে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করা, ড্রাগসেবন থেকে যুবসমাজকে বিরত রাখা ও বৃক্ষরোপন করা। ক্ষুদিরামের নামে বৃক্ষরোপন করেন নারায়ণপুর অনন্ত, সিলৌত, সিহো, ঢোলী, দুবহা, বিষ্ণুপুর বথুয়া হল্ট এবং ক্ষুদিরাম বোস পুসা রেলস্টেশনে।

অরিন্দম ভৌমিক বলেন, ২০১৬ সালে বলিউডে তৈরি হচ্ছিল ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কিত একটি হিন্দি বায়োপিক 'ম্যায় ক্ষুদিরাম বোস হুঁ'। সেসময় সিনেমার চিত্রনাট্যকারের অনুরোধে ক্ষুদিরাম নিয়ে আগ্রহান্বিত হন। মনে ইচ্ছে জাগে ক্ষুদিরামকে নিয়ে বই লেখার। আর ক্ষুদিরামের শহর মেদিনীপুরেই বড় হয়েছেন অরিন্দম ভৌমিক। সেই ক্ষুদিরামকে নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে জানতে পেরেছিলেন যে ফাঁসির আগে ক্ষুদিরামের শেষ ইচ্ছেগুলো অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। আজ তাই সেইসব ইচ্ছেগুলো পূরনে আগ্রহী হয়েছেন তিনি।

সোহানলালজির বাড়িতে

শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর শেষ ইচ্ছেগুলোর একটি ছিল, তিনি মেদিনীপুরের হবিবপুর সিদ্ধেশ্বরী কালীমায়ের চরণামৃত পান করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছেপূরণ করতে ২০১৮ সাল থেকে প্রত্যেক বছর ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবসে মায়ের চরণামৃত নিয়ে বিহারের মুজাফ্ফরপুর পৌঁছে যান মেদিনীপুর শহরের গবেষক অরিন্দম ভৌমিক। এবারেও অন্যথা হয়নি। হবিবপুর সিদ্ধেশ্বরী কালীমায়ের মন্দিরে দেবীর চরণামৃত তুলে দিয়েছেন পূজারী হিমাদ্রি চট্টোপাধ্যায়। তা নিয়েই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন মুজাফ্ফরপুর।

ক্ষুদিরামের শেষ ইচ্ছেগুলোর একটি ছিল, তিনি হবিবপুর সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের চরণামৃত পান করতে চেয়েছিলেন

ক্ষুদিরামের চিতাভূমির মাটি এবং গণ্ডক নদীর জল দিয়ে মেদিনীপুর জেলায় শুরু করেছিলেন বৃক্ষরোপন অভিযান। নাম দিয়েছিলেন 'সবুজ ক্ষুদিরাম'। ২০১৮ সালেই প্রকাশিত হয় অরিন্দম ভৌমিকের বাংলা ভাষায় লেখা বই 'কে ক্ষুদিরাম?'। এবার আগামী ১১ ই আগষ্ট ক্ষুদিরামের বলিদান দিবসে প্রকাশিত হবে তাঁর লেখা হিন্দি ভাষায় 'কৌন ক্ষুদিরাম' বইটি। এতে রয়েছে ক্ষুদিরাম সম্পর্কিত বহু অজানা তথ্য। থাকবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট।

Latest