ঢাকা জাকির হোসেন : বাংলাদেশের সাবেক ও প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকায় শান্তিপূর্ণ বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)৷ ২৯ জুন শনিবার বেলা তিনটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ হবে। প্রায় আট মাস পর দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে বিএনপি এ কর্মসূচি নিয়েছে। সমাবেশে ঢাকা মহানগর ও জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকেও নেতা-কর্মীরা যোগ দেবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর৷
এদিকে একই সময়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে। দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তারা শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভা করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে প্রধান অতিথি থাকবেন।
বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত ২৬ জুন বুধবার তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে ঢাকায় শনিবার সমাবেশ ছাড়াও আগামী ১ জুলাই সব মহানগর ও ৩ জুলাই সব জেলায় সমাবেশ হবে। দলটির এ কর্মসূচি ঘোষণার দুই দিন পর আওয়ামী লীগ বরাবরের মতো আবারও পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ হঠাৎ করেই ২৮ জুন শুক্রবার বিকেলে আলোচনা সভার কর্মসূচি ঘোষণা করে। প্রতিষ্ঠার প্লাটিনাম জুবিলি উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হলেও এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনেক দিন পর কর্মসূচি করছে দল। এ কারণে সমাবেশটি বড় করতে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেতারা। বর্তমানে ঢাকা মহানগরে বিএনপির কোনো কমিটি নেই। তাই কেন্দ্রীয় বিএনপির ব্যানারে এই সমাবেশ হবে। দলের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে প্রধান অতিথি থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য দেবেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী জানালেন, ‘ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি না থাকলেও আমাদের সব থানায় ও ইউনিটে কমিটি আছে। এ ছাড়া সমাবেশ সফল করতে বিএনপির সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং মহানগর বিএনপির সাবেক নেতারাও কাজ করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা বাড়িয়েছি।’
বিএনপি কর্মসূচি দিলেই আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি কেন দেয়? এর পেছনের কারণটা কী? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগেরই একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বললেন, 'আমাদের দলের ছেলেদের দল থেকে রাজপথে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় এ কারণে যাতে বিএনপি জনগণকে সম্পৃক্ত করে বড় ধরনের কোনো আন্দোলন না করতে পারে৷ সরকারের জন্যই তা সমস্যার৷ কারণ আমরা জানি আমাদের দল যেভাবে ক্ষমতায় আছে তা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে৷ সরাসরি তো আমরা কর্মীদের বিরোধীদের বিরুদ্ধে নামিয়ে দিতে পারি না, তাই প্রতিবার পাল্টা কর্মসূচির আড়ালে দল মূলত আমাদের এই কর্মীদের মাঠে রাখতে চায় বিরোধীদের দমনে৷'
