ঢাকা, জাকির হোসেন: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করছে যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে— এমন অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির দাবি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার যে কোনও প্রচেষ্টা ‘জনগণ প্রতিরোধ করবে’।
শুক্রবার ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিশাল সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্যি, যে অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা একনায়কতন্ত্রের পতনের পর আন্তরিকভাবে সমর্থন করেছিলাম, সেই সরকারই এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে যা নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
ফখরুল অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী প্রশাসনের কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিচ্ছে, বিশেষত গণভোটের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। “যাঁরা নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি তুলছেন, তাঁরা আসলে বিভ্রান্তি তৈরি করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চাইছেন,” বলেন তিনি। ফখরুল পুনর্ব্যক্ত করেন, বিএনপি শুধুমাত্র সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একযোগে গণভোট হলে সেটি সমর্থন করবে। “কেউ যদি গণভোটের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, বাংলাদেশবাসী তা মেনে নেবে না,” —ফখরুলের এই হুঁশিয়ারির পরেই সমাবেশে উপস্থিত জনতা ‘গণতন্ত্রের বিজয় চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়ে।হাজার হাজার বিএনপি কর্মী-সমর্থক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে এই সমাবেশে যোগ দেন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি রাজধানীতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।ফখরুল সরকারের উদ্দেশে আহ্বান জানান, “নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক নয়, জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে মনোযোগ দিন। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।” সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন কার্যালয় থেকে বিপুল মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে, যেখানে শ্লোগান ওঠে — “জাতীয় ঐক্য চাই, অবিলম্বে নির্বাচন চাই।”জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় এনসিপি: এদিকে, পড়ুয়াদের দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি তথা এনসিপি-র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শুক্রবার ঢাকার বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “জুলাই সনদ এখনই প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করতে হবে। এতে কোনও ‘ভিন্নমত বা ভিন্ন নোটের সুযোগ নেই’। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে সংস্কারের পথে।”বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাহিদ বলেন, “শিক্ষা সংস্কার ছাড়া বেকারত্ব বা রাষ্ট্রের স্থবিরতা দূর করা সম্ভব নয়। টানা ষোল বছর ধরে শিক্ষক পদোন্নতি হয়েছে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে। মানসিকতা না বদলালে ফ্যাসিবাদ মুছে যাবে না।”