Skip to content

‘আমি বা আমার পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে না-ও থাকতে পারি’, বললেন শেখ হাসিনা!

1 min read

ঢাকা, জাকির হোসেন: ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউই ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে না-ও থাকতে পারেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এটা আমি বা আমার পরিবারের ব্যাপার নয়। বাংলাদেশের যে ভবিষ্যৎ আমরা চাই, তা অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক শাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই হবে। কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবার দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।”
নয়াদিল্লিতে নির্বাসিত অবস্থান থেকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারটি ছিল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনার প্রথম বড় মাপের মিডিয়া ইন্টারঅ্যাকশন। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। তখন থেকেই তিনি দিল্লিতেই অবস্থান করছেন।৭৮ বছর বয়সি শেখ হাসিনা আরও জানান, আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া “অন্যায় এবং আত্মঘাতী” সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের কোটি কোটি সমর্থক রয়েছে। আপনি যদি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তাহলে এই মানুষগুলিকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারেন না।”তিনি সতর্ক করে দেন, তার দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন “গণতান্ত্রিক বৈধতা হারাবে।” “পরবর্তী সরকারকে অবশ্যই নির্বাচনী বৈধতা পেতে হবে,” মন্তব্য করেন হাসিনা।বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনা করছেন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।

তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।রয়টার্সকে হাসিনা বলেন, “আমি এমন কোনো সরকারের অধীনে দেশে ফিরব না, যে সরকার আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে গঠিত।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি দেশে ফিরতে চাই, তবে শর্ত একটাই—সেখানে বৈধ সরকার থাকতে হবে, সংবিধান অটুট থাকতে হবে এবং প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।”তবে হাসিনার এই বক্তব্য তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আগের মন্তব্যের সঙ্গে কিছুটা ভিন্ন। ওয়াশিংটনে বসবাসরত জয় গত বছর রয়টার্স-কে বলেছিলেন, “দলের অনুরোধ এলে আমি নেতৃত্বের বিষয়টি বিবেচনা করব।”প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে। অভিযোগ, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলন দমন-পীড়নে তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। ট্রাইব্যুনাল নভেম্বরের ১৩ তারিখে এই মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেছে। তবে হাসিনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এই বিচার কার্যত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসন। এসব মামলা সাজানো আদালতের, যেখানে আগেই রায় ঠিক করা আছে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবারের হাতে নয়—আমরা সবাই মিলে সংবিধানিক শাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনলেই দেশ এগোবে।”

Latest