Skip to content

'ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন' আখ্যা দিয়ে ইসকন নিষিদ্ধে রিট করা হল বাংলাদেশের আদালতে!

ঢাকা, জাকির হোসেন: সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও হিন্দু সাধু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রামে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ তথা ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন এক আইনজীবী৷ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করেন। চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারিরও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আবেদনের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের মতামত জানতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে ডেকে পাঠায় আদালত। পরে এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আদালতকে বলেছেন, সরকার বিষয়টি ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ দেখছে। এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। ইসকনের প্রসঙ্গে তিনি আদালতকে বলেন, ইসকন একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন, এই সংগঠনের বিরুদ্ধে কী কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়– সরকার সবকিছু দেখবে এবং আদালতে উপস্থাপন করবে। পরে আদালত বিকেলের মধ্যে ইসকনের বিষয়ে জানাতে বললে অ্যাটর্নি জেনারেল এক দিন সময় চান। আদালত তখন বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে। চট্টগ্রামে ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ, সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের প্রাক্তন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে মঙ্গলবার তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় চট্টগ্রামের হাকিম আদালত। ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণ পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে তাঁকে নিয়ে যাবার সময় তা ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। বেলা সোয়া ১২ টা থেকে পৌনে ৩টা অবধি বিক্ষোভের পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যায়। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। বুধবার সাইফুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সারজিস আলমও ইসকন নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন৷ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের ইংরেজি নাম ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল ইসকন। হিন্দু ধর্মগুরু অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ ১৯৬৬ সালে ন্যু ইয়র্কে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসকন মূলত গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারী। বর্তমানে বিশ্বে ইসকনের ৫০ হাজারের বেশি মন্দির ও কেন্দ্র রয়েছে। গত কয়েক দশকে আমেরিকা ছাড়াও পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া এবং ভারত উপমহাদেশে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

Latest