ঢাকা জাকির হোসেন: গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। তাই ফের মসনদ দখল করতে মরিয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলছে দলটি। একই দাবি জাতীয় পার্টির মতো একাধিক রাজনৈতিক দলের। এই ভোটকে পাখির চোখ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। নতুন দল নিয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছে তাঁরাও। কিন্তু হাসিনার কড়া শাস্তির দাবিতে অনড় ছাত্ররা। এবার মুজিব-কন্যার ফাঁসি চেয়ে ছাত্রনেতা সারজিস আলম বললেন, হাসিনার ফাঁসির আগে নির্বাচন নিয়ে কোনও কথা নয়।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ ঘটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপি'র। যার প্রধান আহ্বায়ক বা নেতা নাহিদ ইসলাম। দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম৷ মঙ্গলবার সকালে তিনি যান ‘জুলাই আন্দোলনে’র শহিদদের কবরস্থানে। সেখানে দাঁড়িয়ে সারজিস বলেন, “এই খুনি হাসিনা শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমার এমন হাজার ভাইকে খুন করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। আমার এমন অনেক ভাই রয়েছে- যাদের দেহ এখন পর্যন্ত খুনি হাসিনা হত্যার পরে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই ঘটনা আমরা ওই শাপলাতে (হেফাজতের সমাবেশ) দেখেছিলাম। শত শত মানুষকে খুন করেছে হাসিনা। কিন্তু দেহগুলো পাওয়া যায়নি।” দ্রুত আওয়ামি লিগ সভাপতি হাসিনার বিচার চেয়ে সারজিস বলেন, “এই খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে হবে একটা কারণেই। খুনি হাসিনা আসবে, বিচারের মঞ্চে দাঁড়াবে, এরপরে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবে। আমরা যারা এই জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে ছিলাম যেন মরার আগে অন্তত ওই খুনি হাসিনার বিচারটা দেখে মরতে পারি।” একসময় মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন সারজিস। কিন্তু এখন সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে তিনি বলছেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং আইন উপদেষ্টা যদি খুনি হাসিনার বিচার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে করে না যেতে পারেন, তাহলে তা এই সরকারের সবচেয়ে বড় দায়বদ্ধতা। সারাজীবন এর দায় তাদেরকেই বহন করে যেতে হবে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে একটা কথা বলি, দায় বহন করে যাওয়ার মধ্যে সব শেষ না। এই বিচার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় করতে হবে এবং যে সময়টুকু এই সরকারের আছে- নির্বাচনের আগেই খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে ফাঁসির মঞ্চে নিতে হবে। যতদিন না আমরা খুনি হাসিনাকে ওই ফাঁসির মঞ্চে না দেখছি, এই বাংলাদেশে কেউ যেন ভুল করেও নির্বাচনের কথা না বলে।” এর আগেও এই ছাত্রনেতারা বলেছিলেন, কোনওভাবেই আওয়ামি লিগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেবেন না। এখনও বলছেন, হাসিনার বিচারের আগে ভোট নিয়ে কোনও কথা বলতে না। এই মুহূর্তে হাসিনা রয়েছেন ভারতে। গত আগস্ট মাসেই দেশ বাঁচাতে, দল বাঁচাতে রাজনীতির ময়দানে নামার কথা জানিয়েছিলেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে ফিরবে তার মা। হাসিনাও কয়েকদিন আগে ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, তিনি দেশে ফিরবেন। তবে, ছাত্ররা কোনওভাবেই "খুনি" হাসিনার দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে৷