Skip to content

'বার্ড ফ্লু'-ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছে, প্রায় গোটা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ!

নিজস্ব সংবাদদাতা : ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করলেন নতুন সংক্রমণ নিয়ে, যা কোভিডের থেকেও ১০০ গুণ ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। যে বা যারা সংক্রমিত হবে, তাদের অর্ধেকেরই প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।সম্প্রতিই একটি গবেষণায় বার্ড ফ্লু নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে। গবেষকরা বার্ড ফ্লু-র এইচ৫এন১ স্ট্রেইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, সংক্রমণের শিখরে পৌঁছে গিয়েছে এই ভাইরাস। যেকোনও সময়েই তা মহামারির রূপ নিতে পারে। বার্ড ফ্লুয়ের এই স্ট্রেইন স্তন্যপায়ী,এমনকী মানবদেহেও সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। এক গবেষক জানিয়েছেন, বার্ড ফ্লুয়ের এই স্ট্রেইন যদি আরও অভিযোজন বা মিউটেশন হয় এবং অতি সংক্রামক ধারাই বজায় রাখে, তবে মৃত্যুহারও বাড়তে পারে। মিউটেশনের পর মানবদেহেও সংক্রমণ ভয়ঙ্কর হারে ছড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মৃত্যুও বাড়বে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সাল থেকে যতজন H5N1- বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় গোটা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। আক্রান্ত হচ্ছে বাড়ির পোষ্যরাও।গরুর দুধে পর্যন্ত মিলছে বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস। এই মুহূর্তে আমেরিকার ৫০ রাজ্যের মধ্যে ৩১টি রাজ্যে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসের সংক্রামক প্রজাতি H5N1-এর ট্রেস পাওয়া যাচ্ছে। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছে খামারের হাঁস-মুরগিদের থেকেই ছড়াচ্ছে রোগ। এ ছাড়া পরিযায়ী পাখিরাও বয়ে আনছে ভাইরাস। গরু, কুকুর, বিড়াল – কিচ্ছু বাদ যাচ্ছে না। বিড়ালের ওপর এফেক্ট পড়ছে সবচেয়ে বেশি। বিড়াল খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পশু চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোয় বেড়েই চলেছে ভিড়। আমেরিকার পশু খামারগুলোয় একের পর এক রোগ ছড়িয়ে পড়ায় গবেষণা শুরু করেছে ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড। গবেষকরা বলছেন, বন্য প্রাণীদের শরীরেও ঢুকে পড়ছে বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস। জঙ্গলের ইঁদুর, শিয়াল এমনকি সিংহদেরও কাবু করে দিচ্ছে H5N1 ভাইরাস। আর সবচেয়ে চিন্তার কথা হল এই ভাইরাস প্রবল ছোঁয়াচে। তাতে মানুষও আক্রান্ত হচ্ছেন। পোষ্য প্রাণীদের থেকে মানুষের শরীরে যদি দ্রুত হারে ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা। আপনাদের নিশ্চই মনে আছে ২০০৬ সালে এই রোগ ভারতে মাথাচাড়া দেয়। তারপর নিয়মিত ব্যবধানে সে বারবার ফিরে এসেছে। আমরা দেখেছি পোলট্রি ফার্মে মুরগি মেরে ফেলা হচ্ছে। সংক্রমণের ভয়ে নাক-চোখ-মুখ ঢেকে পোলট্রিতে মানুষকে কাজ করতে হচ্ছে। আতঙ্কে খরিদ্দাররা পালানোয় বাজারে আলুর দরে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। ভারত-সহ নানা দেশে এখনও পর্যন্ত যত বার্ড ফ্লু ছড়িয়েছে। প্রায় সবক্ষেত্রেই দেখা গেছে অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের H5N1 টাইপটা রয়েছে। আমেরিকাতেও তাই। যেটা শুরুতেই বললাম। প্রখ্যাত ব্রিটিশ মহামারি বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক ভ্যালেন্সে ভারতের মতো জি-টুয়েন্টি দেশগুলিকে বলেছেন, আপনারা অবিলম্বে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজান। না হলে আরেকটা প্যানডেমিক সামাল দেওয়া যাবে না। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়বে একটা দেশ থেকে অন্য দেশে।

Latest