Skip to content

"বলপেন" -শুভঙ্কর সাউ

1 min read

-আপনার পেনটা একটু হবে?ক্যাস কাউন্টারের সামনে নীল শাড়ি,চোখে চশমা পরিহিতা মেয়েটার হাতে টাকা তোলার স্লিপ আর সাথে বল পেনটা দেখেই বোধহয় মন্দার তাকে বেশ সহজ সুরেই প্রশ্নটা করে ছিলো।

মেয়েটার মন্দারের কথাটা কানে যেতে সে যেই নাপিছু ফিরেছে মন্দার তো তাকে দেখে পুরো গলে জল।কী মিষ্টি!পরিপূর্ণা উপমা দেওয়াই যায়।-আমাকে বললেন?-হ্যাঁ,আসলে আমার পেনটার..কিছুটা কথা আর কিছুটা হাতের ইশায়ার মন্দার মেয়েটাকে বোঝাতে সক্ষম হলো তার পেনটা সে খুঁজে পাচ্ছে না।ছিলো তার কাছে।মেয়েটা তার হাতের পেনটা মন্দারের দিকে বাড়িয়ে দিলো।বেশ কিছুক্ষন পর মেয়েটার টাকা তোলা এবং গোনা হয়ে গেলে সে তার একটা ছোট্ট ডায়রি ব্যাগ থেকে বের করে তাতে কিছু লিখতে যাবে খেয়াল পড়লো পেনটা সে একটুআগে একজনকে দিয়েছে।প্রায় নাকের কাছে নেমে আসা চশমাটা একটু তুলে আর চশমার ফ্রেমের কাছে নেমে আসা চুলের সরু গোছাটা কানের পিছনে সরিয়ে সে চারিদিকে চেয়ে খুঁজতে লাগলো ছেলেটাকে।

কিন্তু ছেলেটা বেপাত্তা।কোথায় গেলো?পেনটা ভুল করে নিয়ে চলে গেলো না কি!ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো দেড়টা বাজবো বাজবো করছে।মেয়েটা ভাবলো, ডায়রিতে না হয় টাকার অঙ্কটা পরে লেখা যাবে কিন্তু একটা ফিক্সড ডিপোজিটের ফর্ম ভরার আছে।সেটা ফিল আপ করতে তো পেনটা লাগবে।মনে মনে বিরক্ত হলো মেয়েটা।সে ভাবলো,এই জন্যেই কাউকে হেল্প করতেনেই।এখন নিজের পেন থাকার সত্ত্বেও অন্যের কাছে পেন চাইতে হবে।আর ব্যাঙ্কে কারোর কাছে পেন চাইলে লোকে কেমন ব্যবহারটা যে করে তা ভালো মত জানা আছে তার।একজন মহিলার হাতে একটা পেন দেখতে পেয়ে মেয়েটাএগিয়ে গিয়ে তাকে নরম সুরে বললো--দিদি আপনার পেনটা একটু পাওয়া যাবে?মেয়েটা তো তাকে পেন চাইছে শুনে কী রেগেই না গেলো।দু চার খানি কথাও শুনিয়ে দিলো মেয়েটাকে--দেখেতো মনে হয় কলেজে টলেজে পড়..একটা পেন সাথেক্যারি করতে পারোনা...মহিলাটির মুখ ঝামটা খেয়ে মেয়েটা মনে মনে দুচার খারাপকথা মন্দারের নামে বলতে বলতে সে ব্যাঙ্কের নীচের তলায়গেলো একটা পেন কিনে আনতে।অনেক খুঁজেটুঁজে একটা দোকান থেকে পেন নিয়ে আসতে করতে দেখলো ক্যাসকাউন্টার বন্ধ।টিফিন টাইমের ব্রেক আরম্ভ হয়ে গেছে।

ব্যাস,মেয়েটা তো তখন ভেতরে ভেতরে তেতে পুড়ে একাকার।সর্বাঙ্গ জ্বলে যাচ্ছে তার ওই ছেলেটা মানে মন্দারে কথা ভেবে।খিদেও পাচ্ছে।আবার কাজটাও করে ফিরতে হবে।বেলা দুটো পঁচিশে যখন সে ব্যাঙ্কের সব কাজ মিটিয়ে বাইরে বেরিয়েছে তখন তার খিদেয় মাথা ঘোরবার অবস্থা।আর ঠিক সেই সময় মন্দার না জানি কোথা থেকে তাকেদেখতে পেয়ে তার সামনে এসে হাজির।তাকে দেখে মেয়েটার তো মাথা রাগে আগুন।-ম্যাডাম সরি সরি সরি আপনার পেনটা।আমি ভুলে নিয়েচলে গিয়েছিলাম।সো সরি,...-আপনার কোনো কান্ডজ্ঞান আছে।কেউ হেল্প করলে তারহেল্প ফিরিয়ে দিতে হয় তা না উলটে আপনার জন্য আমারসময় নষ্ট,অন্যের কাছে অপমান,খিদে...-সত্যিই সরি..আমি আসলে অফিসের কাজে এসেছিলাম।চেকটা বাউন্স হয়ে গেছিলো তো মাথা একদম কাজ করছিলো না।ভুলে চলে গিয়েছিলাম।শুধু পেনটা ফেরত করতে আবার অফিস থেকে এলাম।সরি..-আপনার সরি নিয়ে কী আমার পেট ভরবে।যা হবার তো..কথা শেষ হলোনা।কোথা থেকে আচমকা আকাশ ভেঙেঝমঝম করে বৃষ্টি নামলো।ব্যাস,একে দেরী হয়েছে তার ওপর এ আবার এক নতুন ঝক্কি।রাগ তো এমনিতেই মাথায়ছিলো মেয়েটার,তাই হঠাৎ বৃষ্টি আসার রাগটাও সে ঝেড়েদিলো মন্দারের ওপর।-কেন যে আপনার সাথে দেখা হয়েছিলো।আজ বিপদের পর বিপদ।বলে মেয়েটা যেন বিরক্ত মুখে একবার তার চোখের চশমাটা চোখের ওপর জোর করে টেনে বসিয়ে নিজের মনে দুচার বার বিড়বিড় করলো।

মন্দার তখন কী বলে...খেয়ালপড়লো তার ব্যাগে একটা বিস্কুটের প্যাকেট আছে।তাই সে--বলছি আপনার বোধহয় খুব খিদে পেয়েছে।যদি বলেন তো আমার ব্যাগে একটা বিস্কুটের প্যাকেট আছে।দেবো?-আপনাকে চিনিনা জানিনা,আপনার থেকে বিস্কুট খাবোভাবলেন কীকরে..?রাগে মন্দারের দিকে মেয়েটা আর না তাকিয়ে উল্টোদিকেফিরে বার কয়েক ঘড়িটা দেখে নিলো মেয়েটা।মেয়েটা ঘড়িদেখছে আর নিজের গলায় যা বলছে(বাসটা এলেও হয়..)মন্দারের কানে গেলো কথাটা।তাই সে প্রশ্নটা না করে থাকতে পারলোনা--আপনি কোন দিকের বাসে উঠবেন?মেয়েটা উত্তর দিলোনা।ফের মন্দার জানতে চাইলো--আপনি কোন দিকের বাসে যাবেন জানতে পারি..-শ্মশানে যাওয়ার বাসে চাপবো...ধরিয়ে দেবেন..?-এমন করে বলছেন কেন...আসলে এখানে তো কোনো বাস দাঁড়াবেও না।

আমি জানি সেটা..কিন্তু ব্যাগে টাকা আছে।বৃষ্টিতে কী ভিজে ভিজে স্ট্যান্ডে যাব নাকি..?মন্দারের তখন লক্ষ্য পড়লো মেয়েটার গলায় একটা আইকার্ড আছে।যেটা আগে তার লক্ষ্য পড়েনি।খুব ছোটো ছোটো অক্ষর হলেও-'গোপীবল্লভপুর কলেজ' শব্দগুলো তার চোখ এড়ালো না।সে বুঝলো মেয়েটা গোপীবল্লভপুরকলেজের ছাত্রী।কলেজেই ফিরবে এমনটা ভেবে নিয়ে সেওই বৃষ্টির মধ্যে মাথায় একটা রুমাল জড়িয়ে স্ট্যান্ডের দিকেছুটলো।মেয়েটা তাকে দৌড়াতে দেখলো কিন্তু কোনোরকমরিয়্যাক্ট করলোনা।ঠিক মিনিট দুয়েক পর মন্দার দূর থেকেহাত বাড়িয়ে মেয়েটাকে উদ্দ্যেশ্য করে-।-গোপীবল্লভপুরের বাস ছাড়ছে..আপনি ওই দিকেই যাবেনতো চলে আসুন।মেয়েটার তখন আর অত ভাবার সময় নেই যে ছেলেটা কীভাবে জানলো সে গোপীবল্লভপুরেই যাবে।সে শাড়ির আঁচলটা মাথায় কোনোরকমে ঢেকে পা টিপে টিপে দৌড়ালো।আর ব্যাগের টাকা...??ধুর ভেজে ভিজুক।বাস স্ট্যান্ড থেকেবাস প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলো,মন্দার বলে কয়ে বাসটাকেদাঁড় করিয়ে রেখে মেয়েটাকে আসতে দেখে--তাড়াতাড়ি আসুন..জলদি...অবশেষে মেয়েটা বাসটা পেয়ে গেলো।এবং উঠে সামনেইজানালার ধারের সীটটা।পেটে খিদে থাকলেও যাবার জন্যবাস পেয়েছে এটা ভেবে তার মন কিছুটা প্রসন্ন হলো।রাগওপড়লো।ছেলেটাকে কী এর জন্য একটা থ্যাংকস দেবে সে?নাহ..কী দরকার..তার ভুলেই তো..হঠাৎ ছেলেটা জানালারধারে বসে থাকা মেয়েটার দিকে একটা বিস্কুটের প্যাকেটজানালার ভেতর অবধি বাড়িয়ে দিয়ে--এটা রাখুন,খেয়ে নেবেন..আর সরি এগেন...,মেয়েটা বিস্কুটের প্যাকেটটা ফিরিয়ে দিতে গিয়ে বাস ছেড়েদিলো।ছুঁড়ে দেবে তার দিকে?

নাহ,তা অভদ্রতামী দেখায়।বাস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মন্দারের হাসি মুখটা আরকথাগুলো কিছুটা আবছা ভাবেই চোখে ও কানে পড়লো।-সাবধানে যাবেন..আর থ্যাংক ইউ পেনটা তখন দেওয়ারজন্য।টাটা..কী অদ্ভুত রকমের ছেলে তাই না!একটা ছোট্ট পেন সে ভুলকরেই হয়তো তার সাথে নিয়ে চলে গিয়েছিলো,তাও তো সেফিরিয়ে নাও দিতে আসতে পারতো।সে সেটা ফিরিয়ে দিতেঅফিস থেকে এলো,তারপর তার রাগও সহ্য করলো,আবারবাস ধরিয়ে দিলো,এমনকি বিস্কুটের প্যাকেটটাও..ইদানীং কালে এমন ঠান্ডা আর কাইন্ড নেচারের মানুষ সচরাচর তোদেখাও যায় না।জানালার ধারে বসে বৃষ্টিমাখা মধুর বাতাসঅনুভব করতে করতে মেয়েটার এসব কথাগুলোই বারবারমনের মধ্যে ভেসে উঠছিলো।ছেলেটার এই অল্প কিছুক্ষনেরব্যবহার তার মনের জায়গা করেছে।খিদেটা অনেকটা মরেগিয়েছিলো তাও ছেলেটার দেওয়া বিস্কুটের প্যাকেটটা সেনা ছিঁড়ে পারলো না।কারোর ভালোবেসে দেওয়া কোনো কিছুকে উপেক্ষা করতে নেই যে।বিস্কুটের প্যাকেট কেটেএকটা বিস্কুট মুখে পুড়ে মেয়েটা আবারও খেয়ালের দুনিয়ায় হারিয়ে যেতে লাগলো।

ছেলেটার কথাগুলো তার কানেরভেতর অবধি যেন বাজছিলো।কিন্তু আমি সে কোথায় যাবেসেটা ছেলেটা জানলো কীভাবে?..কীভাবে?বিস্কুটটা শেষকরে যখন জলের বোতল থেকে জল খেতে গিয়ে বাসেরঝাঁকুনিতে দু চার ফোঁটা জল তার বুকের কাছে পড়ে গেলোসে সেটা পরিস্কার করতে গিয়ে বুকের আই কার্ডের ওপর চোখ পড়তে সেই প্রশ্নের উত্তর সে আবিস্কার করে ফেলল।এই ঘটনার প্রায় এক মাস পরের একটা দিন।মেয়েটা প্রায়ভুলেই গিয়েছিলো মন্দারের কথা।সেদিন মেয়েটা কলেজেকম্পিউটার এর নতুন রূমে ডেস্কটপ বসানোর কাজ চলছেসে দেখতে এসেছে।সবে সেই রূমে ঢুকেছে কী কয়েকজনছাত্রী দরজার বাইরে থেকে ভেতরে এসে--ম্যাম,জিওগ্রাফির প্র‍্যাকটিক্যাল খাতা গুলো সাইন করেদেবেন বলেছিলেন..-আরে এখানে আনলি কেন..আর আমি সাথে করে পেনটাও তো আনিনি..তোদের কাছে আছে...অমন সময় কে একজন ডেক্সটপ সেটিং করছিলো সে হাতবাড়িয়ে একটা ডটপেন তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে--এই নিন...সাইন করে দিন..ডেক্সটপের আড়ালে মেয়েটা ভালোকরে ছেলেটার মুখটাওদেখতে পাচ্ছিলোনা।তাই--আপনি..?আচমকা ডেস্কটপের ওদিক থেকে সোজা হয়ে একগালহাসি মুখে মন্দার দাঁড়ালো।মেয়েটার বুকটা তাকে দেখে ছ্যাৎ করে উঠলো।আবেগকে সামলে রেখে সে আগে পেনটা নিয়ে ছাত্রীদের প্র‍্যাক্টিকাল খাতা গুলো টপ টপ সাইন করে দিলো।মেয়েগুলোর তো বিরাট আনন্দ..ম্যাম অন্যবারএকটা একটা করে খুঁটিয়ে দেখে হাজারটা প্রশ্ন করে তবেইসাইন করেন।তাই খুশি হয়ে ছাত্রীরা সমস্বরে--থ্যাংক ইউ ম্যাম বলে চলে গেলো তারা চলে গেলে পর চাপা উৎসাহে মেয়েটা মন্দারকে প্রশ্নকরলো--আপনি এখানে..মানে??

এই যে আপনাদের কলেজ আমাদের কাজ দিয়েছে তাই..-ব্যস্ত..নইলে বাইরের দিকে আসুন না..মন্দার ও মেয়েটা কলেজ ক্যাম্পাসের একটা নিরিবিলিতেগিয়ে কথা শুরু করলো।প্রথম কথাটা যদিও মেয়েটা বলল--প্রথমেই বলি,ভীষন দু:খিত আমি..সেদিনের সেই ব্যবহারেরজন্য।নিজেকে লজ্জিতও লাগছে এখন আপনার সামনেদাঁড়িয়ে।আসলে এত মাথা চড়ে গিয়েছিলো এক ভদ্রমহিলার ব্যবহারে।-আরে ঠিক আছে,তাতে কী,আপনার জায়গায় অন্য কেউহলে তো আমায় অপমান করে ছাড়তো।তাও তো আপনি..-আপনার জায়গায় অন্য কেউ হলেও তো আমার ওই দু:ব্যবহারে..তাও তো আপনি..হাসলো মন্দার।তাকে হাসতে দেখে মেয়েটা বললো--হাসছেন কেন?-আরে সরি সরি...আসলে আমাদের শেষ কথাগুলো কেমনএক টাইপ হলো তাই হাসলাম।-ওহ..কিন্তু আপনি না বড্ড সরি বলেন..-অভ্যেস আর কি..-তাই কী..?-সবই তো অভ্যেস।এই যে মানুষ একজন একজনকে ছেড়েথাকতে পারছেনা।আবার একদিন শিখেও যাবে একা থাকাএটাও তো অভ্যেস।আসলে মানুষই একটা অভ্যেস।-বেশ কথা বলেন তো।আসলে আমি না বড্ড রাগি আর শর্ট টেম্পারড।এত গুছিয়ে বলতে পারিনা জানেন।-কিন্তু গুছিয়ে তো বেশ সাজতে পারেন...ভীষন আলতো স্বরে নিজের বেখেয়াল বসত মন্দারের ঠোঁটবেয়ে কথাটা বেরিয়ে এলো।মেয়েটার তা ঠিক কানে যায়নি।

কিছু বললেন..-না না..বলছিলাম কী আগের দিন ভেবে ছিলাম ছাত্রী আরআজ তো দেখলাম দিদিমনি।দেখলে বোঝা যায় না কিন্তুআপনাকে।-তাই না..?আসলে সবাই বলে..কেমন নাকি বাচ্ছা বাচ্ছা আমি।-তা একটু...তবে সাহস দিলে আর একটা কথা বলতে পারি-বেশ,দিলাম সাহস..-ভীষন মিষ্টি আপনি..-ধন্যবাদ।বলে মেয়েটা একবার তার হাত ঘড়িটার দিকে তাকালো।দুটো কুড়ি বাজে।আড়াইটেয় তার ক্লাস আছে।তাই সে--এবার যেতে হবে।আর একটু কথা বলার ইচ্ছে ছিলো।কিন্তুআমার ক্লাস আছে।-আমাকেও তো যেতে হবে।ওরা কী কাজ করছে না করছেদেখতে হবে।যেতে যেতে মেয়েটার হঠাৎ কী মনে হলো মন্দারকে বললো--ভাবিনি আবার এভাবে দেখা হবে...-আসলে কী জানেন তো দেখাটা হওয়ার ছিলো।ওই যে আপনাকে করবার মত একটা সাহায্য আমার কাছে জমা ছিলো।তাই হয়তো হলো...-সে তো আগের দিন তার চেয়ে অনেক বেশি হেল্প আমায়করেছেন।-ওটা তো ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ছিলো...আজকের টা সাহায্য।পেন দিয়ে সাহায্য করেছিলেন আর পেন দিয়েই কেমন সাহায্য পূরণ হলো।তাই না?-বেশ বলেছেন।তবে আপনার নামটা জানা হলোনা..-মন্দার..মন্দার মালিক।আপনারটা?-সেঁজুতি বর্মন।ভালো লাগলো আজকের দেখাটা হয়ে।আপনার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিতে পারলাম।তা কতদিন এখানে কাজ করবেন?-আজকেই..মন্দারের শেষ কথাটা শুনে কিছুটা হলেও সেঁজুতির চোখেএকটা নিরাশা ছেয়ে উঠলো।আর সেটা মন্দারের চোখকেফাঁকি দিলোনা।সেঁজুতি খানিক উদাস ঠোঁটে বললো--ওহ আজকেই শুধু..ভাবলাম আবার হয়তো দেখা হবে..-দেখা হওয়ার থাকলে নিশ্চই হবে।তার জন্য কোনো কারন এর প্রয়োজন পড়বে না।কোনো আয়োজনেরও দরকার পড়বে না।ঠিক হয়ে যাবে।আর ওই মুভিটা দেখেননি,কী বলেছিলো নায়কটা -যে জিনিস একবার ঘটে তা দ্বিতীয়বার ঘটবে না।আর যদি দ্বিতীয়বারও ঘটে তবে বুঝতে হবে তা তৃতীয়বারও ঘটবে।বেশ আসি তাহলে..-আসুন..দুজনে কিঞ্চিৎ হাসি মুখেই বিদায় নিলো।এই বিদায়ের ঠিকদুদিন মাত্র পর হঠাৎ কোলকাতা যাওয়ার ট্রেনের টিকিত নিতে গিয়ে কাউন্টারের মুখে প্রায় ঢাক্কা লেগে যাওয়ার অবস্থায় দেখা।দুজনকে দুজনকে দেখে যেন শ্রাবণের প্রথম বৃষ্টিকে স্পর্শ করবার মতই আনন্দিত।

সেঁজুতি একগাল হাসি মাখা ঠোঁটে--তুমি...হঠাৎ যে কীভাবে তার আপনি বলাটা তুমিতে রূপান্তরিত হয়ে গেছে তার খেয়াল নেই।যেমনটা হলো মন্দারেরও..-আমারও সেই একই প্রশ্ন তুমি..মানে এখানে..ভাবিনি...-তুমিই তো বলেছিলে কি একটা মুভির ডায়লগ...যে জিনিস একবার দুবার..নাকি সব...সেঁজুতির কথা শুনে সেই টিকিট কাউন্টারের ভীড়ের মাঝে মন্দার হো হো করে হাসলো।তারপর হাসতে হাসতে বললো--দিদিমনি তো কিছুই মনে রাখতে পারেনা দেখছি।বলেছিলাম,যে জিনিস একবার ঘটে তা দ্বিতীয়বার ঘটবে না।আর যদি দ্বিতীয়বারও ঘটে তবে বুঝতে হবে তা তৃতীয়বারও ঘটবে।

Latest