নিজস্ব সংবাদদাতা : বিশ্ব ফুটবলে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত! মাত্র সাড়ে পাঁচ লক্ষ জনসংখ্যার আফ্রিকান দেশ কেপ ভার্দে অর্জন করে ফেলল ফিফা বিশ্বকাপের টিকিট। এটি পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলের কাছাকাছি আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। মোট আয়তনে পশ্চিমবঙ্গের ২২ ভাগের এক ভাগ। তারাই পেয়ে গেল ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের টিকিট। আইসল্যান্ডের পর এটিই বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ, যারা নিজেদের দক্ষতা ও লড়াইয়ের জোরে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেল। অন্যদিকে, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ ভারত—যার জনসংখ্যা প্রায় ১৪৫ কোটি—এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের আসরে যোগ দিতে পারেনি। এ যেন ফুটবলের এক পরিহাস—যেখানে ক্ষুদ্র দেশগুলোও স্বপ্ন ছুঁয়ে ফেলছে, আর ভারত আজও শুধু স্বপ্ন দেখছে ‘বিশ্বকাপ খেলার’। আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের ছোট দ্বীপদেশ কেপ ভার্দে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফুটবলে অবিশ্বাস্য উন্নতি দেখিয়েছে। তাদের জাতীয় দল আফ্রিকা কাপ অব নেশনসেও নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছে। এবার সেই সাফল্যের ধারা ধরে রেখে, তারা বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়ে ইতিহাস রচনা করল।

এই নিয়ে মোট ২২টি দেশের টিকিট পাকা হল বিশ্বকাপে। আয়োজক দেশ হিসাবে কানাডা, মেক্সিকো, আমেরিকা খেলবে। আফ্রিকা থেকে কেপ ভার্দে ছাড়াও যোগ্যতা অর্জন করেছে ঘানা, মরক্কো, তিউনিসিয়া, মিশর, আলজেরিয়া। এশিয়া থেকে টিকিট পেয়েছে উজ়বেকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডন, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, জাপান। এর মধ্যে জর্ডন এবং উজ়বেকিস্তান এই প্রথম বিশ্বকাপে খেলবে। লাতিন আমেরিকা থেকে জায়গা পেয়েছে আর্জেন্তিনা, ইকুয়েডর, ব্রাজ়িল, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, কলম্বিয়া। ওশেনিয়া থেকে খেলবে নিউ জ়িল্যান্ড। ইউরোপ থেকে এখনও কোনও দল যোগ্যতা অর্জন করেনি। সেখান থেকে সরাসরি ১৬টি দল যোগ্যতা অর্জন করবে। সব মিলিয়ে ২২টি দেশের খেলা নিশ্চিত হয়েছে। এখনও বাকি ২৬টি জায়গা। ভারতের ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন—“কবে আসবে সেই দিন, যখন ভারত বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের পতাকা উড়াবে?”
কেপ ভার্দের মতো ক্ষুদ্র দেশের এই কীর্তি প্রমাণ করে দিয়েছে, স্বপ্ন বড় হলেই দেশ ছোট মানে না। প্রয়োজন শুধু পরিকল্পনা, পরিশ্রম আর ফুটবলের প্রতি আন্তরিকতা। ভারতের ফুটবল কাঠামো, অবকাঠামো ও প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বমঞ্চে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। কেপ ভার্দের এই ঐতিহাসিক যোগ্যতা অর্জন হয়তো ভারতের জন্য এক বড় প্রেরণা হয়ে উঠবে।
