ঢাকা, জাকির হোসেন: জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত সুপারিশে ‘গরমিল’ রয়েছে— এই অভিযোগ তুলে ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিল বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।”বিএনপি’র অভিযোগ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপি–সহ বিভিন্ন দলের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমতগুলো গণভোটের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সালাহউদ্দিনের কথায়, “যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলো সই করেছে, সেই স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে গিয়ে বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে অনেক নতুন পরামর্শ ও সুপারিশ ঢোকানো হয়েছে। অথচ কমিশনের আলোচনায় এগুলির কোনো উল্লেখ ছিল না।”প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এক বছর ধরে সংবিধান সংশোধনের খসড়া তৈরি করে গত ১৭ অক্টোবর ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ নামে তা দলগুলিকে সই করায়। মঙ্গলবার সেই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনূসের হাতে তোলে কমিশন।একই দিনে জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার দাবি করেন, “নভেম্বরের মধ্যেই জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট করতে হবে।” বিএনপিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, “যারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চায়, তারা জুলাই সনদকে অকার্যকর করতে চায়। এরা প্রথম থেকেই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই রাজি হয়নি।” প্রতি-উত্তরে ভিন্ন এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে, দু’টি ব্যালটে হবে। নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই।”এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলি রিয়াজ জানান, সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং সংসদ নির্বাচনের আগে বা একই দিনে গণভোটের সুপারিশ করা হয়েছে। তার ভাষায়, “নির্বাচিত সংসদ প্রথম ২৭০ দিন সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে। এই সময়ের মধ্যে সংশোধন পাস না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে।”বিএনপি’র সালাহউদ্দিন আহমেদ এ প্রস্তাবকে ব্যঙ্গ করে বলেন, “পরীক্ষায় যেমন অটোপাস হয়, সংবিধানে তেমন কিছু হতে পারে না! এটা নিছক হাস্যকর। ঐকমত্য কমিশন দায় এড়াতে এমন সুপারিশ করেছে।”