ঢাকা, জাকির হোসেন: গুমের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে এবার মৃত্যুদণ্ডের বিধান আনল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫’, যার মাধ্যমে গুমের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বৈঠকটি সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক আইন। এই আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশে আর কখনও গুমের ঘটনা ঘটবে না। কোনও ফ্যাসিবাদী সরকার আর গুমের ভয় দেখিয়ে দেশ চালাতে পারবে না।”নতুন আইন অনুসারে, গোপন আটককেন্দ্র বা কথিত ‘আয়নাঘর’-এর মতো স্থাপনা পরিচালনাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১২০ দিনের মধ্যেই গুম-সংক্রান্ত মামলার বিচার শেষ করতে হবে—এই নির্দেশও রয়েছে অধ্যাদেশে।একই বৈঠকে সরকার ‘বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়াও প্রকাশ করেছে। ওই প্রস্তাবে টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো বা জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করার অপরাধে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ৯৯ কোটি টাকা জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন অভিযুক্তরা। অশ্লীল বা হয়রানিমূলক বার্তা পাঠালে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। টেলিকম সংস্থাগুলি যদি সরকারের নির্দেশ লঙ্ঘন করে, তাহলেও একই ধরনের শাস্তির বিধান প্রযোজ্য হবে।ঢাকার রাজনৈতিক মহল বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুমের ঘটনায় বিচার ও দায়বদ্ধতার দাবি জানিয়ে আসছিল। ইউনূস সরকারের এই পদক্ষেপ তাই দেশের ইতিহাসে এক বড় আইনি মোড়বদল হিসেবে দেখা হচ্ছে।