নিজস্ব সংবাদদাতা : এগরা মহকুমা হাসপাতালে ফের চাঞ্চল্যকর ঘটনা। চিকিৎসায় গাফিলতি ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। শিশুমৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ — চিকিৎসকের গাফিলতি এবং হাসপাতালের কর্মীদের উদাসীন আচরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে নবজাতকের।পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীরা। অভিযোগ, সেই সময়ই বিক্ষোভকারীদের একাংশ তাদের উপর চড়াও হয়। এক পুলিশকর্মীর উর্দি ছিঁড়ে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থলে আরও পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মৃত শিশুটির মায়ের দাবি, ‘‘আমার বাচ্চা জ্বর হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ৭ দিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আজ ও মরে গেল।’’ তারই সাথে আরও বলেন ‘‘হাসপাতালের ডাক্তার ভাল ভাবে চিকিৎসা করেননি। কোনও সমস্যার কথা বলতে গেলে আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছেন। বাচ্চাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও ছাড়েননি ওঁরা।’’ ঝামেলার কারন হিসেবে অভিযোগ করে জানান ‘‘আজ ছেলে মরে যেতে ওই সিকিউরিটি কর্মী (যাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ) মুখের ওপর বলে দিল, ‘একটা বাচ্চা মরে গেলে আর একটা আসবে।’ এই কারণে ওঁর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে।’’ শিশুমৃত্যু এবং গন্ডগোল প্রসঙ্গে এগরা মহকুমা হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য বলেন, ‘‘হাসপাতালে শিশুটিকে খুব খারাপ অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার কী কী চিকিৎসা হয়েছিল, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এই বিষয়ে সমস্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে পাঠাব। তবে এখনও পর্যন্ত এই শিশুমৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা হয়নি। লিখিত অভিযোগ এলে আমরা পদক্ষেপ করব।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি এও খবর পাওয়া যায় শিশুটির মৃত্যুর পর তাঁর বাবার সঙ্গে সিকিউরিটি কর্মী অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেছেন। শিশুটির বাবাকে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বার করে দিয়েছেন। সে জন্যই উনি উত্তেজিত হয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই হাসপাতালে নার্স থেকে সুরক্ষাকর্মীদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না। যদিও অনেকেই আবার পুলিশকর্মীর সঙ্গে এরূপ আচরণের নিন্দা করেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ঘিরে এমন অভিযোগ নতুন নয়। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে — বারবার এমন অবহেলা ও অরাজকতা কেন? সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই বা কতটা সুরক্ষিত?
