বরুণ কুমার বিশ্বাস: ঘাটাল: ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য রাজ্য সরকার সরকারিভাবে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরেই রূপায়ন কর্তৃপক্ষ একটার পর একটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

প্রথমতঃ নদীর পশ্চিম পাড়ের ব্যবসায়ী সমিতি নদীর গার্ড ওয়াল নির্মাণে তাদের ব্যবসার সমূহ ক্ষতির কথা তুলে ধরে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন।
দ্বিতীয়তঃ পরবর্তীকালে নতুন খাল খননের জন্য প্রয়োজনীয় জমির মালিকগণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আন্দোলনে সামিল হন । সেসব অবশ্য এখন অতীত। এইসব সমস্যা নিরসনের জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করা হয়েছে।

দোকান বাড়িঘর বাঁচানোর জন্য এবং খাল খননের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় জমির মালিক গণ এখন প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝে এবং বিনিময় অর্থের পরিমাণ নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন।নদী খালের ড্রেজিং-এর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে । পলি তোলার কাজ শুরু না হলেও তার আগের যে সব কাজ সবই প্রায় সারা, কিন্তু নদী ও খালের দুই পাড়ে কয়েকশো গাছ কাটা পড়ার এক নতুন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প রূপায়ণের স্বার্থে সেচ দপ্তর তোড়জোড় শুরু করেছে।এই প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ৪৬৪ কিলোমিটার নদী ও খালের ড্রেজিং হওয়ার কথা তার মধ্যে ৮৬ কিলোমিটার শিলাবতীর নদীর ড্রেজিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দপ্তর । কংসাবতী, ঝুমি, কেঠিয়া খাল,পারাং, বুড়িগঙ্গা, সোনাই সহ কুড়ি-বাইশটি নদী ও খালের ড্রেজিং এর দরপত্র চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।
সেচ দপ্তর সূত্রের খবর সংশ্লিষ্ট নদী ও খালের দুই পাড়ে অসংখ্য গাছ রয়েছে। ড্রেজিং শুরু হলেই সেগুলি সব কাটা পড়বে। গাছগুলির বয়স কোন কোনটি ১০০রও বেশি কোনোটি আবার ২৫-৩০ বছরের পুরনো ।সেখানে নদীর পাড়কে শক্ত রাখার জন্য নানা গাছ রয়েছে।
ড্রেজিং শুরু হলে নদীর পাড় ফাঁকা করা জরুরী কারণ পাড় উঁচু করে বাঁধানো হবে।

নদীর গভীরতাও বাড়বে কিন্তু খননকার্য শুরু হলেই পাড় দুর্বল হয়ে পড়বে তখন গাছগুলো আর সোজা হয়ে থাকতে পারবে না। গাছের সংখ্যা মোট ছোট বড় ও মাঝারি মিলিয়ে কয়েক হাজার অনুভূত হয়েছে। দাসপুরে চন্দ্রেশ্বর খাল সম্প্রসারণের জন্য ১৫৩.১৮ একর রায়তি জমি কেনার জন্য একটি সংশোধিত প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। সেচ দপ্তরের তরফে কোথায় কি প্রজাতির গাছ রয়েছে তার চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে এবং বিকল্পভাবে গাছ লাগানোর চিন্তা ভাবনাও নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।ঘাটালের একাধিক পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের দাবি বৃহত্তর স্বার্থে বিকল্প হিসাবে দশ গুণ গাছ লাগাতেই হবে। নদীর পাড়ের উপযোগী গাছও লাগানো জরুরী। সেচদপ্তর আরও জানিয়েছে, ঘাটাল শহরে দু’টি পাম্প হাউস বসানোর জন্য ৬০ কোটি টাকার টেন্ডারের কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। দু’টি পাম্প হাউসের জন্য জমি ক্রয়ের কাজ চলছে। সেচ দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন নিয়ম মেনে গাছ কাটা হবে এবং বন দপ্তরের অনুমতিও নেওয়া হবে। বিকল্প গাছও লাগানো হবে।