নিজস্ব সংবাদদাতা : ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস ঘাটালের থেকে বদলি হয়ে দুর্গাপুরে চলে যাবেন আগামীকাল।ঘাটাল মহকুমায় যতদিন ছিলেন প্রতিটি শহরে শুধু নয়,গ্রামে-হাটে-বাটে-মাঠে ঘুরেছেন।ঘাটালবাসী তাঁকে শুধু মহকুমা শাসক হিসেবে জানেনি,জেনেছে এক অভিভাবক হিসেবে।প্রতিবছর যখন বন্যার জল বাড়তে থাকে,মানুষ ভয়ে কাঁপে,ঠিক সেই সময় রাত জেগে নদীর জলস্তরের খবর নিজে নিতেন তিনি।
সরকারি কন্ট্রোল রুমে বসে নয় রাস্তার ধারে,ঘাটে,আশ্রয় কেন্দ্রে,বন্যার সময় গর্ভবতী মায়েদের গিয়ে বিপদগ্রস্ত মানুষকে আশ্বস্ত করতেন।নিজের হাতে খাবার পৌঁছে দিতেন।কাদা-জল পেরিয়ে সেই হাসিমুখ প্রশাসক যেন মানুষের পাশে থেকে বোঝাতেন“ভয় পেও না,মহকুমা প্রসাশন আছে।” ঘাটালবাসী জানে,এমন প্রশাসক খুব একটা দেখা যায় না। কৃষক পরিবারের সন্তান সুমন বিশ্বাস জানতেন কৃষকের কষ্ট কাকে বলে।তাই সার,বীজ বা কৃষি উপকরণের কালোবাজারি বন্ধে তিনি নিজে নেমে পড়েছিলেন।

একবার কৃষকরা বলতেন“সরকারি অফিসে যাইলে কথা শোনে না কেউ,কিন্তু সুমনবাবু এলে নিজের মতো করে কথা বলেন।”এই কথার মধ্যে লুকিয়ে আছে তাঁর জনপ্রিয়তার আসল রহস্য তিনি ক্ষমতার চেয়ারে বসে নয়,মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন।আজ সমাজসেবার ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।ক্যান্সার রোগীদের জন্য চুল দান,রক্তদান কর্মসূচি,বৃক্ষরোপণ অভিযান,সচেতনতা মূলক প্রোগ্রাম সব ক্ষেত্রেই প্রথম সারিতে দেখা গেছে তাঁকে।কোথাও পোস্টারের মুখ নয়,বরং মাঠে কাজ করা এক প্রশাসক হিসেবে। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আদর্শকে তিনি নিজের জীবনে ধারণ করেছিলেন।নামমাত্র প্রচার নয়,হৃদয় থেকে শ্রদ্ধা।