Skip to content

মেদিনীপুর শহরের জনপ্রিয় "মোটাকালীর" পুজো এখনও একটি জীবন্ত ঐতিহ্য!

পশ্চিম মেদিনীপুর সেখ ওয়ারেশ আলী : কুস্তিগীরদের হাত ধরে জন্ম মেদিনীপুরের মোটাকালী’মানিকপুর ভ্রাতৃসঙ্ঘের পুজোয় আজও জীবন্ত ঐতিহ্যের ছোঁয়া। মেদিনীপুর শহরের মানিকপুরে ‘ভ্রাতৃসঙ্ঘ’ পরিচালিত মোটাকালীর পুজো শহরের অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো। চলতি বছর এই পুজো পা দিয়েছে ৫৮তম বর্ষে।আকারে-আয়তনে এই দেবীর মূর্তি বিশাল, তাই শহরবাসীর কাছে এই পুজো ‘মোটাকালীর পুজো’ বা ‘বড়কালীর পুজো’ নামেই পরিচিত। প্রায় ছয় দশক আগে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল এলাকার কুস্তিগীর ও ব্যায়ামবীরদের উদ্যোগে। তখন মানিকপুর এলাকার তরুণেরা প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করতেন, কুস্তি লড়তেন, অংশ নিতেন দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায়।

ক্লাবের প্রবীণ সদস্য কাবুল দে বক্সী, তপন চৌধুরী, অসিত দাস, তাপস চৌধুরী, সন্দীপ মিত্র প্রমুখ সেই সময়ের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ছিলেন। তাঁদের হাত ধরেই জন্ম নেয় এই অনন্য কালীপুজো। কথিত আছে, পুজোর শুরুতে মৃৎশিল্পীকে তাঁরা বলেছিলেন “আমাদের মা-ও হবেন আমাদের মতোই বলিষ্ঠ ও সুঠাম দেহের।” সেই ভাবনাতেই দেবীর মূর্তি গড়া হয়েছিল বিশাল আকারে।প্রথমদিকে ২৫-২৬ ফুট উচ্চতার মূর্তি গড়া হলেও, বর্তমানে স্থানাভাবের কারণে প্রায় ২০ ফুট উঁচু প্রতিমা নির্মাণ করা হয়।এই পুজোর বিশেষত্ব হল দেবী বসেন গরুর গাড়ির উপর।

সেই গাড়িই মাকে বহন করে নিয়ে যায় নিরঞ্জনের জন্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোমবাতি জ্বালিয়ে মা-কে আরাধনা করেন মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান, সমাজসেবক ও ক্রীড়াবিদ আবির আগারওয়াল,সমাজসেবী অশোক তাপারিয়া মেদিনীপুর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সৃজিতা দে বক্সী, ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজ, ক্লাবের সদস্য বৃন্দ প্রমুখ। তারা পুজোর সময় একাধিক সামাজিক কর্মসূচিও গ্রহণ করে। এ বছর তারা এলাকা দুস্থদের বস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে পুজোর সূচনা করে।

পুজো শেষে বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে ক্লাবের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা গরুর গাড়িতে দেবীকে নিয়ে যান কাঁসাই নদীর ঘাটে। নিরঞ্জন শেষে গরুর গাড়িটি আবার ফিরিয়ে আনা হয় ক্লাবে— যা আজও অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্য। ক্লাবের বর্তমান সদস্য বলেন “আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন প্রকৃত ব্যায়ামবীর। তাঁদের অনুপ্রেরণাতেই আজও আমরা সেই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করি। আমাদের মা মোটাকালী শুধু পুজোর প্রতীক নয়, মানিকপুরের ঐক্যের প্রতীক।

Latest