ঢাকা, জাকির হোসেন : ভারতের সঙ্গে থাকা সীমান্ত সংক্রান্ত যে সব ‘অসম’ চুক্তি রয়েছে, তা বাতিল করতে চাইছে বাংলাদেশ। দুই দেশের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে বিবাদ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনূস সরকার। অন্যদিকে, ভারত জানিয়েছে, দুই দেশে নিরাপত্তার স্বার্থেই এই বেড়া দেওয়া জরুরি।
গত কয়েকদিনে পশ্চিমবঙ্গের মালদার সুকদেবপুর সহ কয়েকটি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি মাঠে নামতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষকেও। বাংলাদেশের দাবি, লালমনিরহাটে তিন বিঘা এলাকা সহ সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল ভারত। তাদের আপত্তিতে এখন সেই কাজ বন্ধ আছে। এই নিয়ে রবিবারই ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৈঠকের পরে তিনি জানিয়েছেন, দুই দেশই সীমান্ত এলাকা অপরাধমুক্ত রাখতে চাইছে। তাই ওই এলাকায় বেড়া নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে তার জন্য বাংলাদেশের সরকার দায়ী করছে হাসিনার আমলে হওয়া চুক্তিকে। ওই চুক্তি বাতিল করতে চাইছে তারা। আগামী মাসেই বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এবং বিএসএফের ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তখনই তা বাতিল করার জন্য বলা হবে জানিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন–সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে চারটি চুক্তি হয়েছে। ১৯৭৫ সালের চুক্তি অনুসারে, দুই দেশের জিরো পয়েন্টের ১৫০ গজের মধ্যে কোনও কাজ করা যায় না। সেখানে কিছু কাজ করতে হলে দু’দেশের সম্মতির প্রয়োজন। কিন্তু হাসিনার আমলে হওয়া চুক্তিতে জিরো পয়েন্টেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া যাবে। এটাকেই ‘অসম চুক্তি’ বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ রবিবার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "বিগত সরকারের আমলে হওয়া ‘অসম সমঝোতা চুক্তি’ আমরা বাতিল করতে চাইছি। এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই বিদেশ মন্ত্রককে জানানো হয়েছে। ওই চুক্তি বাতিল করার বিষয়ে ভারতে চিঠি দেওয়া হবে। কূটনৈতিক ভাবেই এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বিদেশ মন্ত্রক।" আগামী মাসেই বিজিবি এবং বিএসএফের ডিজি পর্যায়ের বৈঠক হবে। তখনই চুক্তি বাতিল করার বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।