নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে চলছে শিক্ষা দফতরের দুর্নীতি। অনেক বছর ধরে চলছে খড়গপুরের নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে লড়াই। খড়গপুরের নিমপুরা আর্য বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা নানা দুর্নীতির অভিযোগ স্কুল শিক্ষা দফতরের ডিআই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে সরব হয়েছেন খড়গপুরের বিশিষ্ট সমাজকর্মী ডাঃ দীপককুমার দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, 'তথ্য আড়াল করছেন ডিআই। যা কিনা বড়ো অপরাধ।' ২০১৮ সালে সেসময়ের জেলাশাসক পি মোহন গান্ধীর কাছে নানা অনিয়ম নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান দীপক দাশগুপ্ত। জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে নবান্নের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোয় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পর জেলাশাসক সর্বশিক্ষা মিশন ও স্কুল শিক্ষা দফতরকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সর্বশিক্ষা মিশনের ২ সদস্য এসে শুধুমাত্র প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেই চলে যান বলে অভিযোগ। ওই রিপোর্ট জেলাশাসক ও শিক্ষা কমিশনারকে পাঠানো হয়। কিন্তু অভিযোগকারী দীপক দাশগুপ্ত আজ পর্যন্ত জানতে পারলেন না রিপোর্টের ভিত্তিতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা কমিশনারের কাছ থেকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এসেছে কিনা তা জানতে চেয়ে তিনি বারবার স্কুলশিক্ষা দফতরে যোগাযোগ করার পরেও কোনো সদুত্তর পাননি। দীপক দাশগুপ্ত ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি তথ্য জানার অধিকার আইনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ডিআইয়ের কাছে জানতে চান। ৩ মে ডিআই তাঁকে জানান, গ্রিভ্যান্স সেলের নির্দেশমাফিক কোনো তদন্ত রিপোর্ট তাঁর অফিসে নেই। আর বিকাশ ভবন থেকে শিক্ষা কমিশনের কোনো চূড়ান্ত নির্দেশিকা হাতে পাননি।

অভিযোগকারী সমাজকর্মী বলেন, 'স্কুলের স্বার্থে দুর্নীর্তি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা সমর্থন জানান। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ডিআই অফিস তদন্তে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করেছে। প্রশাসনের নির্দেশে তদন্ত চলাকালীন ১জন অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষককে অবসরকালীন পেনশন, গ্র্যাচুইটি পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্কুল পরিদর্শক কেন তাড়াহুড়ো করলেন? এটা তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চেয়েও উত্তর পাইনি।' তথ্য আড়াল করার মতো গর্হিত অপরাধ করেও কেন ডিআই আদালতের কাঠগড়ায় যাবেন না সে প্রশ্ন তুলেছেন ওই সমাজকর্মী। তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে জেলাশাসককে জানানোয় ২০২৪ সালের ২ আগস্ট জেলাশাসক চিঠি দিয়ে ডিআইকে তথ্য জানার অধিকার আইনে তাঁকে নির্দিষ্ট সমসয়সীমার মধ্যে যাবতীয় উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেন। তাই তাঁর অফিসে ঢুকে দীপক কুমার দাশগুপ্ত ওপেন চ্যালেঞ্জ করলে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন ডিআই স্বপন সামন্ত।চিৎকার আসলে তাঁর ভেতরে জমে থাকা ভয়ের প্রতিফলন।

তিনি ভেবেছিলেন পুলিশের ভয় দেখালে, চিৎকার করলে সেই নাটকে দীপকবাবু ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাবেন।কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্রত নিয়ে যিনি মাঠে নেমেছেন তিনি যে কোনো অঙ্কেই পিছোবেন না সেটা কয়েকদিন পরেই বুঝে যান ডিআই।যে ডিআই জেলা শাসকের গ্রিভ্যান্স সেলের পাঠানো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে জেলা শাসককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন নিজের ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তাঁর কাছে এর চেয়ে বেশী কিছু আশা করা যায় না। একজন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে ডিআইয়ের এই ভূমিকা শিক্ষা দফতরের পক্ষে লজ্জাজনক। শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবী দীপককুমার দাশগুপ্ত এই দুর্নীতি শেষ করে ই ছাড়বেন । তিনি মনে করেন স্কুল গুলো যদি দুর্নীতিমুক্ত হয় তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা মানে যার ভালো হবে । রাজ্যের সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত স্বচ্ছ ভাবে এই দুর্নীতির ঘাটতি পূরণ করতে হবে। বাঙালি যেন এর ফলে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ এপ্রিল সোমবার তিনি কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে করে শালবনি জিন্দাল পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধনে এসে পৌঁছবে আর ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার একটি প্রশাসনিক বৈঠক সূত্রের খবর । মনে হচ্ছে দীপককুমার দাশগুপ্ত এই দুর্নীতির কথা সুযোগ পেলে সামনে জানাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে?

